প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ০০:০০
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতি ক্রমশ বাড়তে থাকার কারণে ফরিদগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে তিন শতাধিক গো-খামারি ও কৃষকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সামনে কোরবানির ঈদ। কোরবানির গরু-ছাগল প্রস্তুত করে রাখার পরেও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না তাদের। প্রতিবছর ঈদুল ফিতরের পর থেকেই কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রি শুরু হয়। অথচ ঈদের দু সপ্তাহ বাকি থাকলেও এলাকায় কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় শুরু করতে পারা না পারা নিয়ে সকলের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র মতে, এ বছর উপজেলায় ৫ হাজার গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যদিও বেসরকারি তথ্য মতে এর পরিমাণ দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।
জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় কয়েক হাজার গরু-ছাগল লালন-পালন করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হিসেবে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় চার শতাধিক ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। এর মধ্যে ঈদ উপলক্ষে খামারী এবং কৃষকের বাড়ি থেকেই বড় একটা অংশ পশু বিক্রয় হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার এখনও পর্যন্ত বেপারী ও ব্যবসায়ীরা সাধারণ ক্রেতাদের দেখা পাচ্ছেন না। করোনার কারণে ও লকডাউন দেয়ায় কেউ এলাকায় আসছে না।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষক বাড়িতে দু-চারটি করে গরু-ছাগল লালন পালন করেছেন। গরুর খামারিরা জানান, বেশি দামে গো-খাদ্য কিনে ও আনুষঙ্গিক অনেক খরচ করে যদি পশুর সঠিক মূল্য না পাওয়া যায় তাহলে তাদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে। অনেক খামারী আশা করছেন ঈদের আগেই করোনা পরিস্থিতি ভাল হলে এবং গরু নিয়ে বিভিন্ন বাজারে যেতে পারলে গরু বিক্রি করে লাভবান হওয়া যাবে। যদি করোনার কারণে কোরবানির পশু বিক্রি করতে না পারি তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।
উপজেলার হর্ণি দুর্গাপুর গ্রামের পাটোওয়ারী এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আকবর পাটোয়ারী জানান, আমি ৩৬টি গরু প্রস্তুত করেছি। চির্কা গ্রামে ভাই ভাই ডেইরী ফার্মের স্বত্বাধিকারী মাহফুজ জানান, ঈদ সামনে রেখে আমি ৭০টি গরু প্রস্তুত করেছি। পাটোয়ারী বাজারের আরেকজন খামারী সেন্টু পাটোয়ারী বলেন, কোরবানি ঈদ সামনে রেখে আমি ৮০টির উপরে গরু-ছাগল প্রস্তুত করেছি।
অন্যদিকে কয়েকজন খামারী বলেন, আমরা গো-খামারি ঋণ নিয়ে গরু কিনে লালন পালন করছি। করোনার ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। গত বছরও করোনার কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে এবারও তেমনটি হবার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জ্যোর্তিময় ভৌমিক বলেন, উপজেলায় পর্যাপ্ত গরু-ছাগল রয়েছে। করোনার কারণে হাট-বাজারের কী অবস্থা হবে তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, হাটে না গিয়ে অনলাইনে পশু বিক্রির জন্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।