প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২১, ১১:৫০
মৈশাদীতে মোনাজাতকে কেন্দ্র করে মুসল্লিদের দ্বিধা-বিভক্তি
কয়েকভাগে নামাজ আদায়
চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের তালতলাবাজার জামে মসজিদে ফরজ নামাজের পর মুনাজাতকে কেন্দ্র করে মুসল্লিদের কয়েকভাগে নামাজ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এই মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাওঃ আবুল কালাম আজাদ (৬০) ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দীর্ঘ ৩৪ বছর এই মসজিদে ইমামতিতে ফরজ নামাজের পর মোনাজাত করতেন। কিন্তু বর্তমানে ফরজ নামাজের পর মোনাজাাত না করায় মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। এ ক্ষোভ থেকে প্রতি ওয়াক্তে নামাজে মসজিদে পৃথক দুই-তিন জামাত হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
|আরো খবর
মসজিদের একাধিক মুসল্লি জানান, ইমামের কারণে মুসল্লিদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। নামাজ আদায় নিয়ে ইমামের কারণে আজানের পর মসজিদে যাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকতে হচ্ছে মুসল্লিদের। কারণ হিসেবে মুসল্লিরা উল্লেখ করেন, ইমাম সাহেব হঠাৎ করে নামাজ শেষে মোনাজাত দেয়া বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে মুসল্লিদের সাথে কয়েকবার তার বাগ্বিত-া হয়। মুসল্লি মোশাররফ বলেন, ইমাম সাহেব দীর্ঘ বছর এখানে ইমামতি করেন। তিনি আগে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর মোনাজাত দিতেন। বর্তমানে ফরজ নামাজের পর মোনাজাত না দেয়ায় মুসুল্লিরা এ নিয়ে সভাপতির কাছে বলেও কোনো সমাধান পায়নি। বরং সভাপতি বলেছেন যাদের ইমামকে পছন্দ না হয় তারা আলাদা জামাত করুক। সে কারণে মসজিদে এখন দুটি জামাত হয়।
মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ হচ্ছেন তালতলা বাজার জামে মসজিদের ইমাম। এ বিষয়ে ইমামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ মসজিদ মাদ্রাসা আমার হাতে গড়া, আমি বিভিন্ন স্থান থেকে অনুদান এনে এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করছি। এখন কিছু লোক তাদের স্বার্থের জন্যে আমার বিরোধিতা করছে। আমি কয়েকদিন মোনাজাত না দেয়ায় একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে সভাপতি সাহেব আমাকে বলেছেন। এখন আমি ফরজ নামাজের পর মোনাজাত দেই।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ তপন খান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইমাম সাহেব এ মসজিদ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ইমামতির দায়িত্ব পালন করছেন। এখন ওনার বয়স হয়েছে। তাই ইমামকে নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলেন। ইমামের ভুলত্রুটির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে সবার সাথে মিলে মিশে চলার জন্য বলেছি। আমরা ইমাম সাহেবকে নিয়ে কোরবানি ঈদের ১৫ দিন পর বসবো। প্রয়োজনে মসজিদ-মাদ্রাসার উপদেষ্টা করে তাকে সম্মানের সাথে বিদায়ের ব্যবস্থা করবো। যারা ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করতে অনিহা তাদেরকে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় পৃথক জামাতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছি।
ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মুফতি এইচএম আনোয়ার মোল্লার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে মসজিদের ইমামের সাথে মুসল্লিদের যে সমস্যা চলছে, তা নিয়ে স্থানীয় ওলামায়ে কেরামদের নিয়ে এবং পাশর্^বর্তী ইমামদের সাথে পরামর্শ করে এলাকার শান্তির লক্ষ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করাই ইমামের দায়িত্ব। এছাড়া মসজিদ কমিটি মসজিদের দ্বিতীয়তলায় আলাদা জামাতের ঘোষণা দিয়ে আরেকটি ফেতনার সৃষ্টি করেছে। এভাবে মসজিদে পৃথক জামাতে নামাজ পড়া ঠিক না। মোনাজাত নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফরজ নামাজের পর মোনাজাত দেয়া মোস্তাহাব। যেহেতু উনি আগে মোনাজাত দিয়ে এসেছেন, এখনও ঠিকমতো মোনাজাত দেয়া ওনার দায়িত্ব।