প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুর বড় স্টেশনে তিন নদীর মিলনস্থলের আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে
কবে থেকে চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে এটা এখনই বলতে পারছি না ------রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক
বাংলাদেশ রেলওয়ে-পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেছেন, চাঁদপুরের তিন নদীর মিলনস্থলে কোনো ধরনের পরিবর্তন না করে প্রাকৃতিকভাবে থাকা স্থানটির আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। এখানে যেসব গাছ আছে সেগুলো থাকবে এবং শ্রীবৃদ্ধির জন্যে আরো নতুন করে গাছ লাগানো হবে। এছাড়াও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে এখানকার ভূমিতে ঘাস লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। একই সাথে এখানে হাঁটার জন্যে ফুটপাত তৈরি এবং ক্যাফেটেরিয়া থাকবে। যাতে করে আগত দর্শনার্থীদের বিভিন্নভাবে সেবা প্রদান করা যায়।
|আরো খবর
গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর বড় স্টেশনের অবকাঠামসহ তিন নদীর মিলনস্থলের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, তিন নদীর মিলনস্থলে যে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা আছে, এটাকে একটি নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনা অর্থাৎ চাঁদপুরবাসী যেন সেখানে অবসর সময় কাটানো এবং বিনোদন উপভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসব উন্নয়নে কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন করা হবে। উন্নয়নের চাহিদার আলোকে ধাপে ধাপে বরাদ্দ এবং ব্যয় হবে।
মহাব্যবস্থাপক বলেন, রেলওয়ের অবকাঠামগত উন্নয়ন কাজগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে নিয়মিত কাজ। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুরে আসা। এখানে আমাদের বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান আছে, সেগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। আর এখানে যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সে পরিকল্পনাও করা হবে।
চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রীদের চাহিদার আলোকে ট্রেনের সময়সূচি র্নিধারণ করি। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে, ভবিষ্যতে এই রুট বর্ধিত করতে পারি। তবে দীর্ঘদিন যেহেতু চাঁদপুর-চট্টগ্রাম যাত্রী চলাচল করছে, সেখানে হুট করে চাঁদপুর থেকে কক্সবাজার ট্রেন চালু করলে চট্টগ্রামের যাত্রীদের আসন কীভাবে দেয়া হবে সেটি ভাবতে হবে। এছাড়া একটি নতুন রুট চালু করার জন্যে নতুন ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের প্রয়োজন আছে। এটির সাথে অনেক কিছু জড়িত আছে।
তিনি আরও বলেন, কবে থেকে চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে এটা এখনই বলতে পারছি না। আমাদের কক্সবাজার স্টেশনের কাজ এখন শেষ পর্যায়। সেখানে কিছু ব্রিজ ও অবকাঠামগত কাজ চলমান। সবকিছু শেষ হওয়ার পর আমরা আশাবাদী অচিরেই চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ট্রেন চালু হতে পারে।
চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আরো আধুনিক করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ট্রেনটিতে এখন যাত্রীদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। এটি আধুনিক করা হবে, তবে সময় লাগবে। কারণ পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে লঞ্চে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি। তবে আমরা সব সময় যাত্রীর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসলে রেল লাইনের পাশে থাকা শহরের বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলা হয়। কর্মকর্তারা চলে গেলে আবারও বসানো হয়। এসব বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মহাব্যবস্থাপক বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রেল লাইনে চাঁদপুরের দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। সেখান থেকে এসে এসব অবৈধ স্থাপনা আমরা নিয়মিত তদারকি কিংবা উচ্ছেদ করতে পারব না। এখানকার স্থানীয় প্রশাসন এবং সচেতন নাগরিকরা এগিয়ে না আসলে আমাদের একার পক্ষে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তারপরেও আমাদের পরিকল্পনা আছে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রেলওয়ের সম্পত্তি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনা। কোনোভাবেই অবৈধ দখলদারদের সুযোগ দেয়া হবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী, বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) মোঃ হানিফ, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মোঃ ইমরান, সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ ও পূর্ত) লাকসাম মোঃ লিয়াকত আলী মজুমদার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের চীফ ইনচার্জ মোঃ সালামত উল্লাহ, চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) সোয়াইবুল শিকদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মহাব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা তিন নদীর মিলনস্থলসহ স্টেশনের উন্নয়ন কাজ ও অবৈধ স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন।