বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫

বিদ্যালয় ও সাবেক খেলোয়াড়দের অর্থায়নে মধুসূদন মাঠের সংস্কার শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিদ্যালয় ও সাবেক খেলোয়াড়দের অর্থায়নে মধুসূদন মাঠের সংস্কার শুরু

অবশেষে বিদ্যালয় ও সাবেক খেলোয়াড়দের অর্থায়নে পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি সংস্কার শুরু হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে সংস্কারের কাজ শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী সুভাষ চন্দ্র রায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণেশ চন্দ্র দাস, সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক ফুটবলার বোরহান খান, সদস্য সচিব সাবেক খেলোয়াড় ও ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম, সাবেক ক্রিকেটার আনোয়ার হোসেন মাঝি, ক্রীড়া সংগঠক সোলেমান ঢালী ও ইয়াকুব বিন ছায়েদ (লিটন) সরকার।

এ মাঠটির চাঁদপুর শহরের ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। মাঠটি ছিলো বৃহত্তর পুরাণবাজার এলাকার ক্রীড়ামোদী মানুষদের প্রাণের জায়গা। প্রতিদিন বিকেল হলেই শিশু-কিশোর এবং তরুণ-যুবকদের আনন্দ উল্লাসে মুখর থাকতো মাঠটি। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে মাঠের আলাদা আলাদা জায়গায় খেলা করতো। সবার মাঝে ছিলো সম্প্রীতি এবং ভ্রাতৃত্ব। আর শুক্রবার হলেই এই আয়োজন বা আনন্দ-উল্লাস বেড়ে যেতো কয়েক গুণ। প্রায় প্রতি মাসেই চলতো ক্রিকেট অথবা ফুটবল লীগের আয়োজন। এই মাঠ থেকে উঠে এসে অনেকেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিজের আলো ছড়িয়েছেন। দেশের অনেক নামকরা খেলোয়াড় এই মাঠে পায়ের স্পর্শ রেখেছেন। জাতীয় ফুটবল দলের অনেক ফুটবলার এই মাঠে খেলেছেন বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে। যখনই খেলাধুলার আয়োজন করা হতো, দেখা যেতো মাঠের চারপাশে ক্রীড়ামোদী দর্শকদের উপচেপড়া ভীড়। চাঁদপুরের অনেক সফল ব্যক্তির নামে এই মাঠে আয়োজন করা হয়েছে ফুটবল টুর্নামেন্ট।

মাঠের পাশে একটি ক্লাব নির্মাণের কারণেই ঠিকমতো খেলোয়াড় আউটডোরে খেলতে না পারলেও কতিপয় ক্লাব কর্মকর্তা ক্লাবের ভেতরে ইনডোরে খেলা চালিয়েছেন জমজমাটভাবে। তাদের এই ইনডোর খেলার কারণে মাঠে ঢোকার সকল গেট বন্ধ থাকতো সবসময়ই। ঠিকমতো খেলোয়াড়রা অনুশীলন করতে যেতেও পারতো না।

ঐতিহ্যবাহী এই মাঠটিতে নিয়মিত খেলাধুলা সহ ইসলামী সম্মেলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো করোনার দোহাই দিয়ে। ঠিক সেই সময়ে ক্লাবটির আয়োজনে এই মাঠে কোটি টাকা ব্যয়ে কনসার্ট, নাচ, গান হয়েছিলো। দু-একজন ব্যক্তি মাঠ এবং ক্লাবটিকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন। আর ক্লাবটি ছিলো যেন এ যুগের এক আধুনিক ‘লালসালু’।

মাঠ সংস্কার করার কথা শুনে এলাকার খেলোয়াড়রা দাবি তুলছেন মাঠটি পুরোপুরি খেলার উপযোগী করে তোলার। ছোট গেটের পকেট যেন খোলা থাকে সব সময়। তাদের দাবি, পুরাণবাজারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্তর্ভুক্ত চারটি ক্লাব রয়েছে। এ ক্লাবের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা খেলোয়াড় তৈরি করার জন্যে ফুটবল ও ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্যান্য খেলার জন্যে এই মাঠে যেন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।

মাঠ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক সাবেক ফুটবলার বোরহান খান এ প্রতিবেদককে বলেন, মাঠে নিয়মিতভাবে খেলাধুলার আয়োজন করতে চাই। মাঠের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হওয়ার কারণে খেলোয়াড়রা ঠিকমতো খেলতে পারে না। আমাদের সাবেক খেলোয়াড়দের অর্থায়নে আমরা মাঠে সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। খুব সহসাই আমরা টুর্নামেন্ট শুরু করবো।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গনেশ চন্দ্র দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মাঠটির অনেক সুনাম রয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠটিতে দেশের নামকরা অনেক খেলোয়াড় খেলে গেছেন। একসময় খেলাধুলা বলতেই এই মাঠটিকে সকলেই চিনতো। আমরা চাই এই মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা আয়োজন করার। বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতে নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারে সেজন্যেই মাঠটি আবার সংস্কার করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও সাংবাদিক আশিক বিন রহিম এ প্রতিবেদককে বলেন, এ মাঠটি আমাদের পুরাণবাজারের ঐতিহ্যবাহী একটি মাঠ।ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে পুরাণবাজার ছিলো একটি প্রসিদ্ধ এলাকা। কালের বিবর্তনে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে এই এলাকার অনেক কিছু। এ মাঠে দেশের অনেক নামকরা খেলোয়াড় খেলেছেন। আমরা চাই মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা হোক। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি, এই মাঠে অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হতো। গত কয়েক বছর ধরে মাঠের পাশে ক্লাবের কর্মকর্তাদের কারণে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়নি। বিশাল পরিসরের মধ্যে ক্লাবের অল্প ক'জন কর্মকর্তা এই মাঠটিকে ব্যবহার করেছিল অন্যভাবে। তাদের কারণে নিয়মিত খেলাধুলায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়রা ঠিকমতো মাঠে এসে অনুশীলন করতে পারতো না। দীর্ঘ বছর পর ঐতিহ্যবাহী পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা ফিরিয়ে আনার জন্যে এলাকার সাবেক খেলোয়াড় এবং ক্রীড়ামোদীগণ মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি ভালো উদ্যোগ।

স্থানীয় এলাকাবাসী অনেকেই এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রায় সময় এই মাঠটি সংস্কারের জন্যে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ এনে নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। এবার যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তারা যেন মাঠটিকে খেলার উপযোগী করে তোলেন এবং নিয়মিত খেলার আয়োজন করেন। তাহলে চাঁদপুর জেলার টুর্নামেন্টে দেখা যাবে পুরাণবাজারের খেলোয়াড়রা নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। আমরা চাই, জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান সভাপতি ও জেলা প্রশাসক খেলাধুলা প্রিয় মানুষ। তিনি যেন বিভিন্ন টুর্নামেন্টের খেলাধুলা এ মাঠে পরিচালনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়