প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২৩:৪৮
শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ১ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে মাত্র ১ রানে জয় পায় ইমরুল কায়েস-মুস্তাফিজের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অলরাউন্ডার সাকিব-আল হাসানের বরিশাল ফরচুনকে হারিয়ে তৃতীয় বারের মত চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা।
|আরো খবর
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের ফাইনাল ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫ টায় মিরপুরে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৫১ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবারের আসরের শিরোপা জিততে বরিশাল ফরচুনের প্রয়োজন ছিল ১৫২ রান। জেতার জন্য খুব একটা বড় সংগ্রহ না হলেও তা টপকাতে পারেনি সাকিবের বরিশাল।
প্রথম ইনিংসে কুমিল্লার হয়ে ওপেন করতে নামেন লিটন দাস ও সুনীল নারিন। আগের ম্যাচে বিপিএলে সবচেয়ে দ্রুতগতির অর্ধশতক তুলে নেন নারাইন (১৩ বলে ৫০)। ফাইনালের মহারণেও আগুনে ব্যাটিং করেছেন নারিন। প্রথম ওভার শেষে কুমিল্লা বিনা উইকেটে ১২। ৫ বলে ১৭ রানে অপরাজিত নারিন। ২ ওভার শেষে কুমিল্লার ৩৬ রানের ৩৩ রানই নারিনের। কুমিল্লার ওপেনিং ঝড় থামাতে তৃতীয় ওভারে বল করতে আসেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব। মাত্র ৪ রান দিয়ে লিটনকে বোল্ড করেন সাকিব। তারপর থেকে শুরু হয় বরিশালের উইকেট পতনের মহোৎসব।
লিটন দাশ সাজ ধরে ফিরলেও থেমে থাকেনি সুনীল। সাকিবের বলে টানা দুই চার মেরে ওই ওভারের শেষ বলে ৩ রান নিয়ে ২১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন সুনীল নারাইন। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ১১তম ফিফটি। আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচেও ঝড় উঠেছে নারিনের ব্যাটে। তবে নারিনকে বেশিক্ষণ তাণ্ডব চালাতে দেয়নি সাকিব বাহীনি।
সুনীল নারিনের ফেরার পর সেমিফাইনালের জয়ের নায়ক চাঁদপুরের মাহমুদুল হাসান জয় রান আউট হয়ে ফেরেন ৮ রান করে। টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারের বিদায়ের পর থেমে যায় রানের চাকা। ফাফ ডু প্লেসি এদিন ৪ রানে ফেরেন মুজিবের বলে কট এন্ড বোল্ড হয়ে। দল নেতা ইমরুল কায়েস হতাশ করেন ১২ বলে ১২ রান করে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে ক্যাচ দিয়ে। আরিফুল হককে রানের খাতা খুলতে দেননি আফগান বোলার মুজিব-উর রহমান।
পুরো ম্যাচে দলের বিপাকে মঈন আলী থিতু হয়েছেন, আবু হায়দার রনিকে নিয়ে দ্রুত রান তুলেন শেষ দিকে। রনির সঙ্গে ৫৩ (৫১) রানের জুটি গড়ে মঈন বিদায় নেন ৩২ বলে ৩৮ রান করে রান আউট হয়ে। রনি ১৯ (২৭) রান করে ফেরেন শফিকুলের বলে কট এন্ড বোল্ড হয়ে। রনিকে ফেরানোর পরের বলে শহিদুলকেও (১) ফেরান শফিকুল। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সংগ্রহ ১৫১ রান। যা সংগ্রহ করতে হারাতে হয়েছে ৯ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে বরিশালের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মুজিব ও শফিকুল। ১ উইকেট করে নেন সাকিব, ব্রাভো ও মেহেদী। এ ম্যাচ জয়ের ফলে বিপিএলের আট আসরে তৃতীয়বার শিরোপার স্বাদ পেল কুমিল্লা। ম্যাচের শেষ অংশটুকু বাদ দিলে পুরো ম্যাচই প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে বরিশাল। তবে ওই যে প্রচলিত কথায় যে আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। শেষটাই তো ভালো করতে পারলো না ফরচুন বরিশাল। শেষ ১৮ বলে ১৮, শেষ ওভারে ১০ এবং শেষ বলে ৩ রানও যে করতে পারলো না তারা। দিন শেষে শিরোপার হাসি ইমরুল কায়েসের, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের, এ হাসি চাঁদপুরের ছেলে ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়েরও।
টুর্ণামেন্ট অব দ্যা ফাইনাল নির্বাচিত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সুনীল নারিন। ১৮ উইকেট নিয়ে সেরা উইকেট শিকারি হন মোস্তাফিজুর রহমান। রানার্স আপ দল পায় ৪০ লাখ টাকা এবং চ্যাম্পিয়ন দল পায় ১ কোটি টাকা।