প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬
চাঁদপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভা
জাতীয় নাগরিক কমিটির সহ. মুখপাত্র মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া বলেছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি নিয়ে একটি বিতর্কিত পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা হচ্ছে, আমরা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করি না কিংবা মুক্তিযুদ্ধকে মানি না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জাতীয় নাগরিক কমিটি বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচাইতে বড়ো অর্জন হচ্ছে ’৭১। অর্থাৎ ’৭১-এর মত অর্জন ও গৌরব আমাদের ইতিহাসে আর আসবে না। রোববার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘চাঁদপুর রাইজিং’ মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে তাঁর বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা যেটা বিশ্বাস করি, ভাষা আন্দোলন, সালাম-জব্বার, রফিক থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নুর হোসেন সহ এই সকল শহীদদের যে রক্ত, এই রক্তের যদি মূল্যায়ন করা হতো, তাহলে ২০২৪-এ এসে আবু সাঈদ এবং মুগ্ধের মতো ২হাজার লোককে জীবন দিতে হতো না। এই বাংলাদেশের সৃষ্টি থেকে যে যে অবস্থান থেকে এবং যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে যেসব লোকজন সংস্কার করতে চায়, সে মানুষগুলোকে আমরা একত্রিত করার চেষ্টা করছি। যেসব মানুষকে নিয়ে আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার বিপ্লব ঘটাতে পারবো। আমাদের ডাক্তার উইং আছে, যাদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে সকল দুর্নীতি সংস্কার করে নতুনভাবে সাজাতে পারবো এবং আমরা ডাক্তারদেরকে একত্রিত করার চেষ্টা করছি। মিরাজ মিয়া বলেন, যারা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের প্রশ্নে এক, তাদের সবাইকে একই সুতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এই সুতার মধ্যে সেখানে ডান থাকবে, বাম থাকবে, সেখানে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী একজন মুসলিম থাকবে, হিন্দু সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী ব্যাক্তি থাকবে, একই সাথে খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী ব্যাক্তিও থাকবে। তিনি বলেন, আমরা যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি, সেখানে রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করা হবে না। সেখানে সকলের ধর্মকে সম্মান করা হবে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, একটি দল বলছে জুলাইয়ে কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়নি। আরেকটি দল নির্বাচনে যাওয়ার জন্যে জুলাইয়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এটাকে অস্বীকার করছে। এই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিস্তারিত তথ্য নেই এবং আইনি দলিলপত্র নেই, আজ থেকে ১০ বছর পর জুলাইয়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তার প্রমাণ থাকবে না। আমাদের যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে বলা হবে কিশোর গ্যাং সদস্য। যে কারণে আমাদের ঘোষণাপত্র তৈরি হয়েছে এবং তা ঘোষণা করা হবে। কারণ প্রতিটি বিপ্লবের পরই এটি করা হয়। ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে এই নতুন বাংলাদেশের পদযাত্রা শুরু হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকলকে একত্রিত হওয়ার জন্যে সকলকে অনুরোধ জানান মিরাজ মিয়া। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চাঁদপুরের প্রতিনিধি ও শিক্ষক নিয়াজ মোরশেদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা. তাজনুভা জাবীন, সদস্য মো. ইব্রাহীম খলিল, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদি হাসান তানিম, খিলগাঁও থানা নাগরকি কমিটির প্রতিনিধি মো. নাজির হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য দেন আহত সম্মুখ যোদ্ধাদের মধ্য থেকে নাইম ইসলাম, এনাম খান ও জাহিদ পাটোয়ারী। চাঁদপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতিনিধি কচুয়া উপজেলার আহমেদ সজীব, হাজীগঞ্জ থেকে আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন, ফরিদগঞ্জ থেকে আশরাফ উদ্দীন আরমান, মুজাহিদ সিহাব, ব্যবসায়ী মো. সাইফুদ্দিন সিকদার, শিক্ষার্থী তামিম, মো. রবিউল, রাহাত ইবনে রুবেল প্রমুখ।