প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
নূতন সিভিল সার্জনের প্রতি প্রত্যাশা
যে কোনো পরিবর্তনে সুফল এবং কুফল দুটোই হয়। একজন সরকারি/বেসরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী যদি তার কর্মদক্ষতায় সুনাম অর্জন করেন, একটি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উন্নয়নে কাক্সিক্ষত অবদান রাখেন এবং এর ফলে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে জনস্বার্থ নিশ্চিত করেন, তাহলে তার নিয়মিত বদলি/অস্বাভাবিক বদলি ও অবসরগ্রহণের পর তার সমমানের কর্মকর্তা/কর্মচারী প্রাপ্তির প্রত্যাশা তৈরি হয়। পরবর্তী কর্মকর্তা/কর্মচারী যদি এ প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হন, তাহলে তো সোনায় সোহাগা, আর ব্যর্থতায় আশায় গুড়ে বালি।
|আরো খবর
ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ চাঁদপুরের সিভিল সার্জন পদে তাঁর কর্মকালে করোনা মোকাবেলায় এতোটা ব্যস্ত সময় পার করেন যে, উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবার যথাযথ মনিটরিং করতে পারেন নি বলে আমাদের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে। তবে ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতায় ও কর্মকুশলতায় তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বিরাগভাজন হননি এবং ছোট-বড় দুর্নামেরও শিকার হননি। তিনি করোনাকালে জেলা সদরে অনিবার্য কর্মব্যস্ততায় সময় পার করেছেন বলে তাঁর অধীনস্থ ক’জন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিশ্চিন্তে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ব্যক্তিগত ফায়দা লুটেছেন এবং অনিয়ম করে পার পেয়েছেন, যেটা ছিলো দুঃখজনক। সিভিল সার্জন পদ থেকে ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ পদোন্নতিজনিত বদলি নিয়ে চট্টগ্রাম চলে গেছেন। সম্প্রতি এ পদে যোগদান করেছেন ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন, যিনি ইতিপূর্বে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন পদে কর্মরত ছিলেন। বৃহত্তর জেলায় কাজ করার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ বলে ইতোমধ্যে তাঁর প্রতি কিছু প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এ প্রত্যাশা পূরণে তিনি সক্ষম হবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
আমরা চাঁদপুরের অন্তত ২-৩টি উপজেলার কথা জানি, যেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বাসা নিয়ে থাকেন না। এরা প্রতিদিন অন্যত্র থেকে যানবাহনযোগে কর্মস্থলে যাতায়াত করেন। এর ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কিংবা অন্য কোনো মেডিকেল অফিসার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে অনিয়মে লিপ্ত হন। করোনাকালে এমন ক’টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন নিয়ে যে কী পরিমাণ স্বেচ্ছাচারিতা হয়েছে, সেটা নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে তথ্য সমৃদ্ধ, ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। চাঁদপুর কণ্ঠকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তৎকালীন সিভিল সার্জন তদন্তও করেননি, দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থাও নেননি।
আমরা বিশ্বাস করি, একের পর এক ফুলেল শুভেচ্ছা ও তোষামোদে নবাগত সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা মনিটরিংয়ের কথা ভুলে যাবেন না। তিনি প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার অন্যান্য কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন এবং সুশাসন নিশ্চিতকরণে কার্যকর নির্দেশনা দেবেন। তিনি যাতে পূর্বসূরির ন্যায় জেলা সদরকেন্দ্রিক নিজের কর্মব্যস্ততায় মগ্ন না হয়ে পুরো জেলার স্বাস্থ্যসেবাকে যথার্থতায় প্রতিপন্ন করেন-তাঁর প্রতি এমন প্রত্যাশাই রইলো আমাদের।