শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪১

সরকারি কর্মকর্তার পক্ষে যখন মানববন্ধন-

অনলাইন ডেস্ক
সরকারি কর্মকর্তার পক্ষে যখন মানববন্ধন-

মতলব উত্তর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে মতলব উত্তর উপজেলাবাসী। বুধবার (২০ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল বেড়িবঁাধের ওপর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে উপজেলার হাজারো জনগণ উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ষাটনল লঞ্চঘাটে গিয়ে শেষ হয়।

মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, কিছু দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও বৈষম্যবিরোধী নামধারী মব সৃষ্টিকারীরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সেলিম খানকে নিয়ে নানা অপপ্রচারের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এতে মতলব উত্তর উপজেলার সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বক্তারা বলেন, পিআইও সেলিম খানসহ আরো অনেক সৎ কর্মকর্তাকে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে না পেরে তাদের বিরুদ্ধে লেগেছে একটি স্বার্থান্বেষী দুর্নীতিবাজ অসাধু মহল। অসাধু গোষ্ঠীটি মূলত মতলব উত্তর উপজেলার মানুষের ভালো চায় না। পিআইও সেলিম খানের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সম্মান ক্ষুণ্ন করতে বারবার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এদের কারণে সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে মতলব উত্তরে আসতে বা এখানে অবস্থান করতে চাইবে না। এটা চলতে দেয়া হবে না। বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন বলেন, এসব ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়া হলে মতলব উত্তরের সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে। আমরা এ ধরনের দুষ্টচক্রের হাত থেকে মতলব উত্তরকে মুক্ত রাখতে চাই। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

কোনো রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গা বঁাচিয়ে চলার মানসিকতায় সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিতে না পারা লোকজন অনেক বেকায়দায় আছেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছোট-বড় প্রতিটি দলের কিছু নেতা/কর্মীর চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণে অনেক সরকারি কর্মকর্তা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকের বুক ফাটলেও মুখ ফাটছে না। এমন দশায় মতলব উত্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পতিত হয়েছেন কিনা জানি না। তঁার সততা ও নিষ্ঠার সার্টিফিকেট আমাদের কাছে নেই। তঁার পক্ষে মতলব উত্তরের সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করার পেছনে কোনো না কোনো কারণ আছে। সে কারণ যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে তঁাকে অনেক সাধুবাদ এবং তঁার পাশে উপজেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে দঁাড়ানো বাঞ্ছনীয় বলে আমরা মনে করছি।

মতলব উত্তরের সাবেক পিআইও আওরঙ্গজেব ফ্যাসিস্ট সরকারের আশীর্বাদে, বিশেষ করে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা, তৎকালীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মায়া চৌধুরী ও তার পূর্বাপর এমপিদ্বয় এবং হাজীগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামালের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে যা যা করেছেন, সেটার বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় যে চিত্র বেরিয়ে আসতে পারে, তাতে শিহরে ওঠা ছাড়া উপায় থাকবে না। কাজের পরিবর্তে টাকা ভাগাভাগিতে আওরঙ্গজেবের পারদর্শিতা মনে রাখার মতো, যা নিতান্তই মুখরোচক, নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য। অভিযোগকারী নেই ও ছিলো না বলে তিনি আপাতত বেঁচে গেছেন এবং বদলি হয়ে ফরিদগঞ্জে কর্মরত আছেন। পূর্বসূরির ন্যায় বর্তমান পিআইও সেলিম খান কিছু করতে পারছেন বলে মনে হচ্ছে না। সেজন্যে ঠিকাদারসহ সু্বিধাপ্রত্যাশী অন্যদের রোষানলে পড়েছেন, যেটা স্বাভাবিক। অতএব, তঁার পক্ষে সাধারণ জনগণ শুধু নয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ আরো অনেকের দঁাড়ানো উচিত বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়