শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

গৃহবধূটির পাশে মানবাধিকার কর্মীরা দাঁড়ান

অনলাইন ডেস্ক
গৃহবধূটির পাশে মানবাধিকার কর্মীরা দাঁড়ান

‘ফরিদগঞ্জে দেবর-ননদের নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ’--এটি গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম। সংবাদটি পড়ে একজন গৃহবধূ স্বামীর অক্ষমতা ও নীরবতায় এবং বাবা-মা'র পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের দূরবর্তী অবস্থানের কারণে কতোটা অসহায় হতে পারে সেটা অনুধাবন করা যায়। তবুও সংবাদটির পূর্ণ বিবরণী তুলে ধরা যাক। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জে দেবর ও ননদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পারভীন বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূ। অব্যাহত নির্যাতনের শিকার এই গৃহবধূ স্থানীয়দের দ্বারা বিচার না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার মিরপুর গ্রামে। থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মিরপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব উল্যার বড় ছেলে আরিফ হোসেনের সাথে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভাতখাওয়া গ্রামের শাহজালাল ক্বারীর মেজো মেয়ে পারভীনের প্রেম ও পরবর্তীতে বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন শুরু হয়। এই দাম্পত্য জীবনে তাদের ৩টি সন্তান এসেছে। স্বামীর সংসারে সুখী থাকলেও দেবর জিয়াউর রহমান, ননদ আফরোজা আক্তার রোমা ও সুমী বেগম কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হতাশা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছেন পারভীন বেগম। শ্বশুরের মৃত্যুর পর পরিবারের কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করেন পারভীনের ননদ আফরোজা আক্তার রোমা। তিনি নিজের ইচ্ছামত নানান ঘটনা রচনা করে তুচ্ছ ওইসব ঘটনায় বেআইনিভাবে গালমন্দ ও মারধর করে পারভীনকে। এভাবেই একাধিকবার দেবর ও ননদ কর্তৃক হামলার শিকার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেও এই জেলাতে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন না থাকায় সকল নির্যাতন সহ্য করে আসছেন পারভীন। নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীর ওপর ছোট ভাই ও বোনের দ্বারা এমন অমানবিক নির্যাতন চোখে দেখেও পরিবারের মানসম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে চুপ থাকতে বাধ্য হয় পারভীনের স্বামী আরিফ হোসেন।

পারভীন বেগম হাউমাউ করে কেঁদে গণমাধ্যমকে বলেন, এখানে আমার স্বামী ছাড়া আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্যে আর কেউ নেই। আমি একাধিকবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েও বিচার পাইনি। তার স্বামী আরিফ হোসেন বলেন, আমি পরিবারের বড়ো ছেলে। তাই ছোট ভাই ও বোনদের নির্যাতন সহ্য করা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। তাদের বাধা দিতে গিয়ে আমিও হামলার শিকার হয়েছি। ভাই ও বোন কর্তৃক স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের কথা তিনি স্বীকার করেছেন। এদিকে অভিযুক্ত আফরোজা আক্তার রোমা ঘটনা অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন বাবুল পাটওয়ারী বলেন, এই পরিবারটির একাধিকবার সালিস হয়েছে। পারভীন বেগম নামে ওই গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার এটা প্রমাণিত। তার স্বামী আরিফ হোসেন সহজ-সরল হওয়ায় ভুক্তভোগী উচিত বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে আমি মনে করছি। ফরিদগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবদুল কাদির বলেন, পারভীন বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি, ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূ পারভীন বেগমের পাশে আইনি বলে ন্যায়সঙ্গতভাবে দাঁড়াবে। তারপরও পুলিশকে সহায়তা করতে কিংবা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজেদের করণীয় সম্পাদন করতে মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা এই গৃহবধূর পাশে দাঁড়ানো উচিত। যখন অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকে না, তখন পুলিশ ও মানবাধিকার সংগঠনই হয়ে যায় প্রধান সহায়। গৃহবধূ পারভীনের জন্যে এমন সহায়ই অনিবার্যভাবে প্রয়োজন। এমন সহায় পেলে মানবতা লাঞ্ছিত হবার হাত থেকে রেহাই পাবে, সর্বোপরি মানবতার ধ্বজা উড্ডীন থাকবে মুক্ত বাতাসে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়