রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

সড়কের দুরবস্থা : বর্ষায় সরব, তারপর নীরব কেন?

অনলাইন ডেস্ক
সড়কের দুরবস্থা : বর্ষায় সরব, তারপর নীরব কেন?

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম আসলেই সড়কের দুরবস্থা নিয়ে সরব হয় দুর্ভোগের শিকার মানুষ, আর গণমাধ্যমকর্মীরা। এমন কোনো গণমাধ্যম নেই যে, চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন না করে। কোনো কোনো গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই সড়কের দুরবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশিত হয়। ধরুন চাঁদপুর কণ্ঠের কথাই। চলতি বর্ষায় প্রায় প্রতিদিন সড়কের দুরবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশিত হয়। যেমন, গতকাল দুটি সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে মতলব দক্ষিণের প্রসিদ্ধ বাজার ও পৌরসভা সদরস্থ নারায়ণপুরের ক্ষত-বিক্ষত একটি সড়ক নিয়ে। এ সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে 'বছরের পর বছর জনদুর্ভোগের নিউজ ছাপা হয় কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না।। ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর ক্ষোভ'। আরেকটি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে 'কচুয়া-কাশিমপুর সড়কের বেহাল দশা : যাত্রীদের দুর্ভোগ'। এ সংবাদটিতো শীর্ষ সংবাদ তথা লীড নিউজের মর্যাদা পেয়েছে। সংবাদটিতে ফরহাদ চৌধুরী লিখেছেন, কচুয়া উপজেলার কচুয়া বিশ্বরোড ফায়ার সার্ভিস থেকে মতলবের কাশিমপুর পর্যন্ত সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৮ কি.মি. এ সড়কটি কচুয়ার সাথে পার্শ্ববর্তী মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সৃষ্টি করেছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-কাশিমপুর বাস চলাচল করছে। এছাড়া তিন উপজেলার অসংখ্য যাত্রী সাধারণ, যানবাহন, সিএনজি অটোরিকশা, ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত অটোবাইক চলাচল করছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় দু বছর পূর্বে সড়কটির সংস্কার করা হলেও এখন ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে পরিণত হয়েছে। এ বর্ষা মৌসুমে এসে সড়কটির কান্দারপাড়, বালিয়াতলী, মনপুরা, বাতাবাড়িয়া, গুলবাহার বাজার, বড়ইগাঁও, দোঘর ঈদগাহ এলাকা পর্যন্ত অন্তত ৩০টি স্থানে সড়কের আস্তর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার বৃষ্টিপাতে পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়, যা এখন ক্রমেই চলাচলের অনুপযোগী হতে চলছে। বিশেষ করে গুলবাহার বাজারের অংশে সড়কের আস্তর উঠে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের এ বেহাল দশায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। গুলবাহার এলাকার জনগণ জানান, এতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন সড়কের গুলবাহার বাজার অংশে বড় গর্ত হয়ে পানি জমে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে বড়ইগাঁও ও দোঘর ঈদগাহ এলাকায় বড় গর্ত হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রী নামিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। অথচ এর সমাধানকল্পে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো পদক্ষেপ। সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওয়াসী উদ্দিন আহমেদের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসী গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

শুধু চাঁদপুরের মতলব, কচুয়া ও অন্যান্য উপজেলায় নয়, দেশের প্রায় সর্বত্র বর্ষা ও বন্যা মৌসুমে সড়কের দুরবস্থা দেখা দেয় কিংবা পূর্ব থেকে দুর্দশাগ্রস্ত ও বেহাল সড়কের অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। আর তখনই দুর্ভোগের শিকার মানুষ গণমাধ্যমকর্মীদের খুঁজতে থাকে এবং সংবাদ পরিবেশনের জন্যে অনুরোধ-উপরোধ করে, এমনকি চাপও প্রয়োগ করে। কিন্তু বর্ষা-বন্যা শেষ হলে ভুক্তভোগীরা যেমন চুপসে যায়, তেমনি গণমাধ্যমকর্মীরাও। অথচ বারবার ফলোআপ করলে সড়কের দুরবস্থা হ্রাসে কিছু না কিছু হয়ে যায়। আর ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যগণ সরব হলে সড়কের দুর্দশা লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হয় এবং এ সকল জনপ্রতিনিধি শুষ্ক মৌসুমে বা অন্য সময়ে সড়কের উন্নয়ন কাজ তদারকি করলে কাজটা ভালো ও টেকসই হয়। কিন্তু সেটা করেন ক'জন? অধিকাংশজনই থাকেন উদাসীন এবং নানা কারণে ও প্রভাবে নীরব। শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা সব দায়িত্ব গণমাধ্যমের ওপর চাপিয়ে যেন খালাস পেতে চায়। এটা কতোটুকু ঠিক? সাধারণ সচেতন নয়, তীক্ষè সচেতন ও অধিকার সচেতন হয়ে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা কাজ করলে ঢালাওভাবে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের স্বার্থ ও সুবিধা কেবল রক্ষা পায় না, আর কিছু অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও মানহীন কাজ এবং কাজহীন বিল তোলার অপকর্মও হয় না। বাস্তবতা হলো, এসব ভাবার সময় কারো নেই। প্রায় সকলেই গোঁজামিল দিয়ে চলতে চায়, দুরবস্থার আগাম আশঙ্কা করেও নীরব থাকে এবং গতানুগতিকভাবে দুরবস্থার শিকার হয়েই অনেক সরব হয়। বস্তুত এতে তাৎক্ষণিক কিংবা টেকসই সমাধান খুবই কম আসে, বড়ো জোর সান্ত¡না আসে ও আশ্বাস মিলে। এই সান্ত¡না ও আশ্বাসের কার্যকারিতা কি আদতে পুরোপুরি দেখা যায়?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়