রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

সড়কের শৃঙ্খলায় সকল ইউএনও'র এমন সক্রিয়তা দরকার

অনলাইন ডেস্ক
সড়কের শৃঙ্খলায় সকল ইউএনও'র এমন সক্রিয়তা দরকার

শাহরাস্তিতে সড়কে শৃঙ্খলা এবং যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে ও নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে। অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয়জন অভিযুক্ত দোকানিকে আইনের বিভিন্ন ধারায় ১২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। ৯ জুলাই উপজেলার দোয়াভাঙ্গা-সূচিপাড়া সড়কের ঠাকুরবাজার ও কালীবাড়ি বাজার এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই সড়কের রাস্তার ওপর বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের অতিরিক্ত মালামাল ও দোকানের নামে স্ট্যান্ড সাইনবোর্ড বসিয়ে আসছিলেন। যেটি প্রশাসনের তরফ থেকে বারংবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আইনের বিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে বিধায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইয়াসির আরাফাত এ অভিযান পরিচালনা করে এ দণ্ড প্রদান করেন। অভিযুক্ত দোকানিদের দণ্ডবিধি, ১৮৬০, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এবং সরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষীয় ভূমি ও ইমারত (দখল পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ, ১৯৭০ অনুযায়ী আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থাগ্রহণ করেন। একই সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন সড়কপথের নিরাপত্তা, দুর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকলকে উপরোক্ত আইনের সকল ধারা মেনে চলার জন্যে অনুরোধ করেন। এছাড়া ৯ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন। পোস্টটি হলো : আজ দোয়াভাঙ্গা মোড়ে সড়কের যানবাহনের শৃঙ্খলা এবং যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক বাস বে ও মূল সড়ক সংস্কার ও মেরামতের কাজ পরিদর্শন করা হয়। দোয়াভাঙ্গা মোড়ের যানজট নিরসনে নি¤েœর সিদ্ধান্তসমূহ সকলকে মেনে চলার জন্যে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হয়--১। দোয়াভাঙ্গা মসজিদের পশ্চিম পাশে (মূল রাস্তার দক্ষিণ পাশে) চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জগামী সকল সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়াবে। ২। কালীবাড়ী টু দোয়াভাঙ্গা রোডের পশ্চিম পাশে পানিওয়ালা, চিতোষী, মোল্লারদর্জ্জা, খিলা, কালীবাড়ি, উপজেলা সদরসহ শাহরাস্তি উপজেলার দক্ষিণ অংশে চলমান সিএনজি অটোরিকশা ‘এক সারি’তে দাঁড়াবে (কোনো অবস্থাতেই দোয়াভাঙ্গা-কালীবাড়ি রোডের পূর্ব পাশে সিএনজি অটোরিকশা রাখা যাবে না) ৩। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দোয়াভাঙ্গা অংশে উত্তর পাশে (বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে) পিচঢালা অংশ বাদ দিয়ে ‘এক সারি’তে (দক্ষিণ দিকে গাড়ির মুখ রেখে) কচুয়া ও মুদাফ্ফরগঞ্জগামী সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়াবে। ৪। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দোয়াভাঙ্গা অংশে উত্তর পাশে (যাত্রী ছাউনির পূর্ব পাশ হতে তালগাছের পূর্ব পাশ দিয়ে) ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাগামী সকল বাস দাঁড়াবে। ৩নং পয়েন্টের কচুয়া ও মুদাফ্ফরগঞ্জগামী সিএনজির অস্থায়ী স্ট্যান্ডের উত্তর পাশ (পিছন দিয়ে) ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাগামী সকল বাস চলাচল করবে একটির পর একটি করে। অনুরোধক্রমে- মোঃ ইয়াসির আরাফাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শাহরাস্তি, চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায়শই নানা কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। কিন্তু গত ৯ জুলাই শাহরাস্তিতে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতটি ছিলো গতানুগতিকতার বাইরে ব্যতিক্রম। সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নের জন্যে এমন ভ্রাম্যমাণ আদালত সাধারণত দেখা যায় না। শাহরাস্তির ইউএনও সেটি করে দেখিয়েছেন। নিঃসন্দেহে সেটি আশা জাগানিয়া। এছাড়া তিনি সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নে কিছু নির্দেশনা জারি করেছেন। এটাও বিরল।

সড়কে বিশৃঙ্খলা কোথায় না আছে। কিন্তু শৃঙ্খলা আনয়নের প্রয়াস অধিকাংশ স্থানেই হয় নামকাওয়াস্তে। ট্রাফিক পুলিশের অপর্যাপ্ততা ও সামর্থ্যের সবটুকুন বিলাতে না পারার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা টেকসই হয় না বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়। এ ছাড়া ট্রাফিক আইন সম্পর্কে না জানা এবং জেনেও সেটা অমান্য করা, আবার জেনেও না জানার ভান করে এক শ্রেণির চালকের বেপরোয়া আচরণ সহ বহুরূপী অসাধুতা, সর্বোপরি আইন না মানার প্রবণতায় ভোগা ও আরো কিছু কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা হয়। এর মধ্যে দোকানিদের দ্বারা সড়কে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। দোকানিদের অধিকাংশ সংলগ্ন ফুটপাত তো মালামাল রেখে দখল করেই, সামনের সড়ক বা রাস্তাও দখল করে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত করে যানজট সৃষ্টির উল্লেখযোগ্য কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটা সকলেরই নজরে পড়ে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে। সেজন্যে প্রতিক্রিয়ায় খুব বেশি নেতিবাচকতা থাকে না। যে কারণে দোকানিরা পার পেয়ে যায়। কিন্তু শাহরাস্তিতে দোকানিরা সেই পারটা পেলো না ইউএনও'র সূক্ষ্ম দৃষ্টির কারণে। সড়কের শৃঙ্খলায় এমন দৃষ্টি ও প্রাসঙ্গিক সক্রিয়তা অন্যান্য ইউএনও'র মধ্যে থাকা দরকার বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়