রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

কিছু শিশুর মৃত্যুর জন্যে পরিবার যখন দায়ী--

অনলাইন ডেস্ক
কিছু শিশুর মৃত্যুর জন্যে পরিবার যখন দায়ী--

যে কোনো প্রকার মানসম্পন্ন ঔষধ কিনলেই প্যাকেটে দেখা যায়, ঠাণ্ডা ও শুষ্ক স্থানে রাখুন এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। এ লেখাটি অধিকাংশজন পড়েও না এবং সেমতে কাজও করে না। এতে কম-বেশি দুর্ঘটনা ঘটেই। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ‘ঠাণ্ডা জ্বরের ওষুধ মনে করে কীটনাশক পান করায় কিশোরীর মৃত্যু’' শিরোনামে এমন একটি দুর্ঘটনার সংবাদ জানা গেলো। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের আমিনপুরে ঠাণ্ডা জ্বরের ওষুধ মনে করে ঘরে থাকা কীটনাশক পানে মারিয়া আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। মারিয়া ওই এলাকার কামাল হোসেনের দুই মেয়ের মধ্যে বড়ো। সে নাওরী স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে এ ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেয়েটির মায়ের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানা যায়। মারিয়ার মা বিউটি বেগম বলেন, তার মেয়ে ঠাণ্ডা জ্বরে অসুস্থ ছিলো। সকাল ৮টার দিকে মারিয়া কাশির ওষুধ মনে করে ভুল বশত কীটনাশক পান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বিষয়টি টের পেয়ে তার এক আত্মীয়ের মেয়েকে সাথে নিয়ে একজন সিএনজি অটোরিকশা চালকের সহযোগিতায় বেলা ১২টার দিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান মারিয়াকে। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে বলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শিশুর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংজ্ঞামতে, মারিয়া ১৪ বছরের কিশোরী ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী হলেও সে কিন্তু শিশুই। সে পড়তে পারতো, লিখতে পারতো। কিন্তু সে জ্বরের প্রচণ্ডতায় অতিষ্ঠ হয়ে বোতল বা পাত্রের গায়ে কী লিখা আছে সেটা না পড়েই পান করে ফেললো কীটনাশক। ফলে যা হবার তা-ই তো হলো, তাকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হলো। তার কিছুদিন আগে হাইমচরে সেলাই মেশিনের তেল খেয়ে মারা গেলো আরেক শিশু। এভাবে শিশুর মৃত্যুর জন্যে প্রথমত পরিবারের কর্তাব্যক্তির উদাসীনতা কাজ করে। দ্বিতীয়ত অসুস্থ শিশুর চিকিৎসায় পরিবারের গাফলতি, অনীহা, অপারগতাহেতু রোগের যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা শিশুর কাণ্ডজ্ঞানহীনতা কাজ করে। এই কাণ্ডজ্ঞানহীনতার জন্যে পরোক্ষ প্ররোচনার জন্যে দায়ী করা যায় পরিবারকে। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা পর্যায়ে জেনারেল হাসপাতালে সরকারের ব্যবস্থাপনায় বিনা মূল্যে ন্যূনতম চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এমতাবস্থায় কোনো অসুস্থ শিশুর চিকিৎসায় পরিবারের অসামর্থ্যের বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপনের সুযোগ নেই। তবে পরিবারের উদাসীনতা ও গাফলতিতে শিশুরা যে জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি রোগে কষ্ট পায়, সে ব্যাপারে কথা বলার যথেষ্ট অবকাশ আছে। এমন কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতে শিশুদের কেউ কেউ চিকিৎসার দায়িত্ব নিজ হাতে নিতে গিয়ে ভুল করে এবং দুর্ঘটনা ঘটায়। যেমনটি ঘটিয়েছে মতলব উত্তরের মারিয়া। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাকে চলে যেতে হলো সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে। বড়ো সন্তান হিসেবে অকালে তার চলে যাওয়াটা পিতা-মাতা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের জন্যে যেমন বেদনাদায়ক, তেমনি সংবেদনশীল প্রতিটি মানুষের জন্যেও। আমরা চাই পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের সচেতনতায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত শিশুমৃত্যু রোধ হোক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়