প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০
বিখ্যাত ব্যক্তির নীরব প্রস্থান

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের কৃতী সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোঃ শফিউল্লাহ মিয়া আর নেই। তিনি গত শুক্রবার (৩১ মে ২০২৪) ভোর ছয়টার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে...রাজিউন)। তিনি ছিলেন বিসিএস ১৯৭২ ব্যাচের মেধাবী অফিসার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ৪ মেয়ে, পুত্রবধূ, জামাতা, নাতি-নাতনিসহ অনেক আত্মীয়স্বজন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিউল্লাহ মিয়া তাঁর চাকুরি জীবনে প্রথমে ম্যাজিস্ট্রেট, এরপর পর্যায়ক্রমে এডিসি, ডিসি ও সর্বশেষ সচিব ছিলেন। ২০০৫ সালে অবসরে যান তিনি। শুক্রবার বাদ এশা রামপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বরকন্দাজ বাড়িতে এই বীর সন্তানের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবার পর মরহুমকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবরস্থানে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য, মরহুমের একমাত্র ছেলে ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (বিসিএস ক্যাডার-স্বাস্থ্য) ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাবেক মেডিকেল অফিসার ও বর্তমানে ঢাকায় সরকারি চক্ষু হাসপাতালে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিউল্লাহ মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বিভিন্ন মহল। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নিঃসন্দেহে মোঃ শফিউল্লাহ মিয়া চাঁদপুর জেলার একজন বিখ্যাত ব্যক্তি। কারণ, স্বাধীনতোত্তর তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমার স্বল্প যে ক'জন ব্যক্তি তাঁদের মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতায় সরকারের সচিব হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন, মোঃ শফিউল্লাহ মিয়া তাঁদের অন্যতম। সর্বোপরি তিনি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অথচ তাঁর আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কেউ তাঁকে উত্তর প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে কোনো উদ্যোগ নেয় নি, যেটা অবশ্যই দুঃখজনক। মৃত্যুবরণের পর চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমেই আমরা জানতে পারলাম মোঃ শফিউল্লাহ মিয়ার কথা। মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে চিনতে ও জানতে না পারাটা আমাদেরও ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা অমার্জনীয়। সেজন্যে আমাদের আছে আত্মদহন এবং ক্ষমা চাওয়ার মানসিকতা। ক্ষমা চেয়েই পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলছি, জনাব মোঃ শফিউল্লাহ মিয়ার মতো বিখ্যাত যাঁরা আপনাদের জানামতে চাঁদপুর জেলা বা দেশের অন্য কোথাও আছেন, তাঁদের সম্পর্কে আমাদের জানান কিংবা জানার সুযোগ সম্পর্কে বাতলে দিন এবং তাঁদেরকে জেলাবাসীর সামনে তুলে ধরার ফুরসত দিন। এতে কেউ না কেউ অনুপ্রাণিত হবে। আর কিছু না হোক, নিজ এলাকার কৃতী সন্তান সম্পর্কে আত্মশ্লাঘা বোধ করবে।