শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০

পরিবেশ রক্ষায় বিষয়টি ভেবে দেখুন

অনলাইন ডেস্ক
পরিবেশ রক্ষায় বিষয়টি ভেবে দেখুন

অত্যাসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদ। তার আগে যদি কোনো খামারের গরু অগ্রহণযোগ্য বা সামান্য কারণে মারা যায়, তাহলে সেটা অন্য সময়ের চেয়ে একটু বিশেষ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে দেখা গেলো, যাতে সচেতন ব্যক্তিমাত্রই উদ্বিগ্ন হয়েছেন। 'মতলব উত্তরে ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে পরিবেশ বিপর্যয় ॥ খামারের গরু অসুস্থ' শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, মতলব উত্তরে অনুমোদনহীন একটি ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ‘মাশাল্লাহ-আলহামদুলিল্লাহ’ নামক খামারির ৮টি গরু গুরুতর অসুস্থ হয়েছে। এতে তার ১৭ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গজরা ইউনিয়নের ডুবগি গ্রামে। এ বিষয়ে খামার মালিক লিটন থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২৮ মে মঙ্গলবার বিকেলে ব্যাটারি কারখানা সংলগ্ন ক্ষেত থেকে ঘাস কেটে গরুকে দেন খামারি জসিম উদ্দিন লিটন। ওই ঘাস খেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছে ৮টি গরু। গরুর অবস্থা খারাপ দেখে খামারেই ৩টি গরু জবাই করেন ও ৫টি গরু কসাইর কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করেন। এর আগেও একই কারণে ক’টি গরু মারা যাওয়ায় কারখানাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। সম্প্রতি আবার চালু করা হয়। ভুক্তভোগী লিটন জানান, ৫ বছর ধরে খামার করেছি। কোনোদিন অসুবিধা হয়নি। এই প্রথম ব্যাটারি কারখানা সংলগ্ন ক্ষেত থেকে ঘাস খাওয়ানোর কারণে গরুগুলো অসুস্থ হয়েছে। এতে আমার ১৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাকি গরুগুলো নিয়ে চিন্তায় আছি। যদি ওইগুলোরও সমস্যা হয় তাহলে পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, ঘাসের মধ্যে বিষাক্ত মিশ্রিত গ্যাস ছিলো। যার কারণে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে গেছে। ব্যাটারি কারখানার সোহেল বলেন, সামান্য পরিবেশ দূষণ হলেও হতে পারে। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া অন্য সকল কাগজপত্র আছে। যেহেতু মানুষের ক্ষতি হয় তাই কারখানাটি বন্ধ করে দেবো। মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন রনি বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

আমাদের দেশের পরিবেশ অধিদফতর নখদন্তহীন এবং নিধিরাম সর্দারের মতো প্রতিষ্ঠান--এটা অনেকেই বলেন। উপজেলা পর্যায়ে তো নয়ই, তবে জেলা পর্যায়ে এই অধিদফতরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু এদের জনবল সঙ্কট থাকায় এবং চাহিদানুযায়ী লজিস্টিক সাপোর্ট না পাওয়ায় এরা পরিবেশ রক্ষায় প্রত্যাশার অনুকূলে কাজ করতে পারছে না কিংবা এ সংক্রান্ত বিষয়কে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়মিত গ্রহণের ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করে চলছে। এমতাবস্থায় সুযোগ সন্ধানীরা পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর অনেক কিছুই করে চলে, যেটা মতলব উত্তরের সুপ্রতিষ্ঠিত গরুর খামারিকে কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করে না, কোথাও কোথাও একটি জনপদ বা জনগোষ্ঠীকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দেয়।

আমরা মনে করি, যে কোনো জেলায় পরিবেশ অধিদফতরকে সীমিত জনবল নিয়েই উপজেলাওয়ারী এমন জরিপ বা পর্যবেক্ষণ করা দরকার, যাতে পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর প্রতিষ্ঠান, উপাদান, কার্যক্রম ইত্যাদি চিহ্নিত করা যায়। সে আলোকে প্রথমে সতর্ক ও সচেতন করা এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করা যায়। এ বিষয়টি ভেবে দেখার জন্যে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়