প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০
যা রটে তা কিছু কিছু বটে এবং রক্ষক যখন ভক্ষক

দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন ও প্রিন্টিং সংস্করণে সংবাদ প্রকাশের পর হাইমচরের নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। নীলকমল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব পেয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন ইলিশের নিষেধাজ্ঞাকালীন দুই মাসে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করেন জেলেদের কাছ থেকে। সেই টাকা নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বসে ভাগাভাগির দরবারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে রোববার দৈনিক যুগান্তরে ‘চাঁদা লেনদেন, হাইমচরে নৌ পুলিশের ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামে এবং এর আগে শনিবার যুগান্তরের অনলাইনে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর এরপরই তাকে তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। একটি সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর হোসেনকে হাইমচর নীলকমল থেকে সরিয়ে নৌ পুলিশের টাঙ্গাইল অঞ্চলে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, নীলকমল নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলাদেশ নৌ পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। তার এমন অনৈতিক কাজে নৌ পুলিশ বাহিনী কোনো অবস্থায় দায় নেবে না। তাই তাকে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। তিনি আরো বলেন, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহম্মেদকে প্রধান করে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
প্রতি বছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে অভয়াশ্রম চলাকালে নৌপুলিশ ও কোস্ট গার্ডের ভূমিকা নিয়ে নানা কথা রটে। চাঁদপুর শহরের ঢালীঘাট অভিমুখী সড়কে অবস্থিত কোস্ট গার্ড কার্যালয়ে আটক জাটকা ও মা ইলিশ বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে এলাকাবাসী নানা কথা রটায়, যদিও প্রমাণ দিতে পারে না। আবার নৌ পুলিশ নিয়ে তো গণমাধ্যমে নানা নেতিবাচক সংবাদ এবং নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জেলেদের মাছ ধরায় সহায়তা ও হাইমচরের চরভৈরবীসহ মতলব উত্তরের মেঘনার পশ্চিম পাশের চরাঞ্চলে রাতে, ভোরে ও সকালে অবৈধভাবে ধৃত মাছ বিক্রির বিষয়টি এড়িয়ে চলার নেপথ্যে মুখরোচক বহু কথা সাধারণ্যে রটানো থাকে। এ ব্যাপারে সচিত্র সংবাদেও টনক নড়ে না নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। এবার নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীরের চাঁদাবাজি ও ভাগাভাগির বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ সহ জাতীয় পর্যায়ে বহুল প্রচারিত অনলাইন পোর্টালে ও প্রিন্টিং সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হলেই নৌপুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে এবং ত্বরিৎ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়। এটা ইতিবাচক। এখন দেখার অপেক্ষা, তদন্ত কমিটি প্রভাবমুক্ত থেকে সঠিক রিপোর্ট দেয় কি না।