প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
ইটভাটার অনিয়ম রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের আগ্রহে ভাটা?

'চাঁদপুর গ্রামে এফবিএম ইটভাটার ধোঁয়ায় ব্যাপক ক্ষতি' শিরোনামে বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রায়শই ইটভাটা নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ চাঁদপুর কণ্ঠ সহ চাঁদপুরের অন্যান্য দৈনিক ও আরো অনেক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এসব সংবাদে যেভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ার কথা, সেভাবে তা নড়ে না। রসিকজন বলেন, এতে সরকারি অসাধু কিছু কর্মকর্তার নাকি 'রেট' পূর্বের চেয়ে বাড়ে। এটার সত্যতা যাচাইযোগ্য, তবে একইভাবে কম-বেশি অনুমেয়।
চাঁদপুর কণ্ঠের উল্লেখিত সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চাঁদপুর গ্রামে এফবিএম ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বাগাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ৮৩নং চাঁদপুর মৌজার দক্ষিণ পাশে এফবিএম নামে ইটভাটাটির কারণে পরিবেশ দূষণ, ফসল ও ফলফলাদির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে আসছে। ঘনবসতি এলাকায় ইটভাটা নির্মাণ নিষিদ্ধ থাকার পরও ৬ বছর ধরে এই ইটভাটা চলে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তর নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে। এলাকাবাসী তাদের ফসল, ফল ও গাছ রক্ষা করার জন্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত এক অভিযোগে উল্লেখ করেন, এফবিএম ইটভাটার আগুন অনেক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইটভাটার মালিক পক্ষকে বলার পরও কোনো কর্ণপাত করে না। পাট, ভুট্টা, মরিচ গাছ পুড়ে যাওয়া, জলপাই, আমড়া, কাউ, কাঁঠাল, আম ইত্যাদি ফল পচে যাওয়া, বিভিন্ন শাক সবজির গাছ মরে যাওয়াসহ রেইনট্রি ও কড়ই গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছে এই ধোঁয়ার কারণে। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা কৃষি অফিস ও বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এই অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো সমাধান মিলছে না। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, দিনের পর দিন আমাদের ক্ষতি হয়ে আসলেও কেউ সেদিকে খেয়াল করছে না। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করছি। এ ব্যাপারে ইটভাটার পরিচালক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, আমাদের ইটভাটার কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় না। যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তা আমরা সমাধান করে ফেলেছি।
এই যে 'সমাধান' করে ফেলার ব্যাপারে ইটভাটার মালিকের দাবিটা অর্থপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। এমন 'সমাধানে'র কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটার যাবতীয় অনিয়মের ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করে এবং দেখেও না দেখার ভান করে বলে নানা মুখরোচক কথা সাধারণ্যে উচ্চারিত হয়। আবার পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ নিয়ে কেউ কেউ সরকারি এই সংস্থাটিকে 'ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারে'র সাথে তুলনা করেন। এটা ঠিক, মাঝে মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরাট ফোর্স, এমনকি ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নিয়ে ইটভাটায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ টাকা জরিমানা ও কারাদণ্ড দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে আবার চুপসে যায়। অভিযানের ব্যাপারে তাদের আগ্রহেও ভাটা পড়ে নানা অজুহাতে। এমনটি কি শোভন বা কল্যাণকর?