প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪, ০০:০০
সর্ষের মধ্যে ভূত! তাড়াবার যথার্থ প্রয়াস চাই

শোনা কথায় বিশ্বাস না করার তাগিদ জ্ঞানীজন দিয়ে থাকেন। কিন্তু ‘যা রটে, তা কিছু হলেও বটে’ এমন সূত্রে আবার উল্লেখিত তাগিদ গুরুত্বহীন হয়ে যায়। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্যে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরে যে সরকারি সংস্থাটি কাজ করছে, সেটি নিয়ে নানান নেতিবাচক কথা শোনা যাচ্ছিল অনেকদিন ধরেই। কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানান ধরনের রটনাও হচ্ছিল। অবশেষে শোনা কথা ও রটনার সত্যতা মিললো।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মরত মাদক কেনাবেচায় জড়িত থাকায় অভিযুক্ত ৪ জনকে একই সঙ্গে বদলি করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয় উপ-পরিদর্শক পিয়ার হোসেনকে। বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ মাসের ব্যবধানে বাকি ৩ জনকেও অন্য জেলায় বদলি করা হলো। ৯ মে ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, অফিস আদেশের প্রেক্ষিতে এই ৪ জন ৭ মে থেকে পরবর্তী তারিখে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে ৫ মে তাদের বদলির আদেশ হয়। ২০২৩ সালে পরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন দেবনাথ, উপ-পরিদর্শক মোঃ সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক পিয়ার হোসেন ও গাড়ি চালক ওমর ফারুক রাজনের বিরুদ্ধে মাদক কেনাবেচায় জড়িত এবং মাসিক টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের তথ্য প্রদানকারী রিপন ঢালী, মাদক বিক্রেতা দেওয়ান মোঃ শাহাদাত হোসেন ও মাদক বিক্রেতা শাহজাহানের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে দাপ্তরিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন তৎকালীন চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলম। তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৯ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর থেকে উপ-পরিদর্শক পিয়ার হোসেনকে বদলি করা হয়। অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় এসব অভিযোগের তদন্ত করেন। প্রধান কার্যালয় অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা ও গাড়ি চালককে ৭ মাস পর বদলির আদেশ দেন। অভিযুক্ত সেন্টু রঞ্জন দেবনাথকে সুনামগঞ্জ, মোঃ সাইফুল ইসলামকে বরগুনা এবং গাড়ি চালক ওমর ফারুক রাজনকে চট্টগ্রাম জেলায় বদলি করা হয়। এছাড়া সহকারী প্রসিকিউটর মোঃ আসাদুজ্জামানকে গাজীপুর জেলায় নিয়মিত বদলি করা হয়।
চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বদলিকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে বলেন, এদের অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত। এই অভিযোগ এবং তার প্রেক্ষিতে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলা পর্যন্ত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিজ্ঞজনের অভিমত, এদের বিরুদ্ধে কেবল বদলিটা লঘুদণ্ড হয়ে যাবে, মামলার মাধ্যমে গুরুদণ্ড কিংবা চাকুরিচ্যুতিই হবে যথার্থ। আশা করি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সর্ষের মধ্যে ভূত তাড়াবার কার্যকর প্রয়াসে উল্লেখিত যথার্থ কাজটিই করবেন।