প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক প্রসঙ্গে
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন এবং ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে ও আত্মীয়-স্বজনসহ তাঁর হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও নাটক মঞ্চায়ন করা নিতান্তই সহজ কাজ নয়। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় লেখকের নাটক লেখা এবং সেটি মঞ্চায়ন করা একাধারে দুরূহ কাজ, অন্যদিকে কম-বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এই অর্থে যে, নাটকের কাহিনী নির্মাণে ইতিহাসের ন্যূনতম বিকৃতি ও চরিত্র চিত্রায়নে কুশীলবদের কারো কোনোরূপ ব্যর্থতা কেউ সহজভাবে ক্ষমার চোখে দেখে না। সর্বোচ্চ সতর্কতা ও তীক্ষ্ণ সচেতনতায় কাহিনী নির্মাণ যেমন করতে হয়, তেমনি মঞ্চায়নও করতে হয়। এজন্যে এমন নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে সাহস ধারণ করতে হয়। চাঁদপুরে এমন সাহস ধারণকারী দুজন লেখককে খুঁজে পাওয়া গেছে। এঁদের একজন রূপক রায় এবং আরেকজন এম. আর. ইসলাম বাবু। দুজনেই শিক্ষক। রূপক রায় রচিত নাটকটি হচ্ছে ‘বত্রিশ জানালা’ এবং এম. আর. ইসলাম বাবু রচিত নাটকটি হচ্ছে ‘ধানমন্ডি ৩২’।
|আরো খবর
অর্থনীতির শিক্ষক রূপক রায় রচিত নাটকটি চাঁদপুর থিয়েটার ফোরামের সভাপতি, বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা ও সাংবাদিক শহীদ পাটোয়ারীর নির্দেশনায় ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়। এই একাডেমির রেপাটরী নাট্য দল এ নাটকটি মঞ্চায়ন করে। করোনার ব্যাপক প্রকোপ ছিলো তখন। সেজন্যে আগ্রহী দর্শকদের ফেসবুক লাইভে নাটকটি দেখতে হয়। নেট সমস্যা না থাকায় নাটকটি খুব ভালোভাবে উপভোগ করতে দর্শকদের অসুবিধা হয়নি।
শিক্ষক, খেলোয়াড়, সাংবাদিক ও নাট্যাভিনেতা এম. আর. ইসলাম বাবু রচিত নাটকটি স্বরলিপি গোষ্ঠীর আয়োজনে একই মঞ্চে সরাসরি দর্শকদের উপস্থিতিতে মঞ্চস্থ হয় ২৯ ও ৩০ আগস্ট। ২৯ আগস্ট এ নাটকটি মঞ্চায়নের পূর্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার)। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নাটকের নাম শুনেই বুঝা যায় নাটকটি কেমন হবে। তিনি সস্ত্রীক নাটকটি দেখেন এবং প্রশংসাব্যঞ্জক অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। পরদিন নাটক মঞ্চায়নের পূর্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপ্রধান শহীদ পাটোয়ারী এবং সঞ্চালক শরীফ চৌধুরী তাঁদের বক্তব্যে এ নাটকটি দেখতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী রাজনীতিক ও ভক্তদের ব্যাপক সমাগম না দেখে হতাশা ব্যক্ত করেন। এমন দর্শকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নিমন্ত্রণপত্র পৌঁছিয়েছেন বলে তারা দাবি করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক, চলচ্চিত্র, বইসহ যা কিছু করা হোক না কেনো, তার পেছনে উদ্দেশ্য থাকে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর আদর্শ ও চেতনার সামগ্রিকতায় তুলে ধরা এবং সেগুলো সঞ্চার করা। এর উদ্যোক্তাদের নানাভাবে উৎসাহিত করা কেবল উচিত নয়, অনিবার্য। এটি আমাদের স্থানীয় প্রশাসন, স্বাধীনতার সপক্ষের সকল সচেতন মানুষ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে আন্তরিকতার সাথে উপলব্ধি করতে হবে। অন্যথায় প্রাগুক্ত উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন এবং হতাশা ও প্রচ্ছন্ন ক্ষোভে পিছিয়ে যাবেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত নাটক মঞ্চায়নে চাঁদপুরে ভবিষ্যতে এমনটি হবে না-আমরা সেই প্রত্যাশা জোরালোভাবে উত্থাপন করছি।