প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৩
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ৪ লাশ উদ্ধার: গুজব নাকি পুরোনো সত্য?

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে একটি সংবাদ—ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে চারজন পলাতক নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তথ্য বিভ্রান্তিকর এবং মূল ঘটনা এক বছর আগের।
|আরো খবর
গুজবটি ছড়িয়ে পড়ার পর রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখে, ‘ধানমন্ডি ৩২ নাম্বর থেকে পলাতক ৪ নেতার লাশ উদ্ধার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে newspaper24.xyz নামের একটি অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ২০২৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি, তবে এই তারিখ ছিল রোববার, অথচ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘মঙ্গলবার’।
আসল ঘটনা কী?
বিভ্রান্তির আসল সূত্র পাওয়া যায় মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক আমাদের সময়-এর পুরোনো এক প্রতিবেদন ঘেঁটে। অনুসন্ধানে জানা যায়, একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট। ওই সময় দৈনিক আমাদের সময় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পূর্ব দিকের একটি বাড়ির রান্নাঘরে চারটি অগ্নিদগ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমে তিনটি লাশ দেখা গেলেও পরে আরও একটি লাশ পাওয়া যায়। দুটি লাশ এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়, রান্নাঘরে গ্যাস বিস্ফোরণের ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ভুয়া সংবাদের উদ্দেশ্য কী?
গুজবটি ছড়ানো পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়েছে, উদ্ধারকৃত লাশগুলো পলাতক রাজনৈতিক নেতাদের। অথচ মূলধারার সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, লাশগুলোর পরিচয় তখনো শনাক্ত হয়নি।
এখানে প্রশ্ন ওঠে—কারা এবং কী উদ্দেশ্যে এক বছর আগের একটি ঘটনাকে সাম্প্রতিক বলে প্রচার করছে? রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটি ছড়ানো হচ্ছে, নাকি কোনো অনলাইন পোর্টালের ক্লিকবেইট কৌশল?
গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যেকোনো তথ্য যাচাই না করে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছেন গণমাধ্যম বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
সর্বশেষ, গুজবকে গুরুত্ব না দিয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিসিকে/এমজেডএইচ