প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
কাজটি সময়মত শেষ হবে তো?

এখন কোনো উন্নয়নমূলক কাজের কথা শুনে হুট করে খুশি হওয়াটা বা আনন্দ অভিব্যক্তি প্রকাশ করাটা যেনো বোকামির পর্যায়ে পড়ে গেছে। এটা নিয়ে দূরের কিংবা কাছের পর্যবেক্ষকরা অর্থপূর্ণ হাসি হাসেন। কারণ, আমাদের দেশে নগণ্যসংখ্যক ঠিকাদারই যথাসময়ে উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেন। বাকি প্রায় সবাই এমনভাবে কাজ করেন, যাতে মনে হয় কে কতো বেশি সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন- সেটার যেনো প্রচ্ছন্ন/পরোক্ষ প্রতিযোগিতা চলে। বাংলাদেশের যে সকল সরকারি সংস্থার কাজ ঢিমেতালে চলার বদনাম আছে, রেলওয়ে তার মধ্যে এগিয়ে। সেজন্যে রেলওয়ের কোনো উন্নয়ন প্রকল্প সমাপ্তির বিষয়ে আস্থা রাখা কঠিন।
‘মোলহেডকে দৃষ্টিনন্দনের কাজ শুরু করেছে রেলওয়ে’ শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সংবাদে খুশি হবার চেয়ে তাই আশঙ্কায় ভোগার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সংবাদটিতে মির্জা জাকির লিখেছেন, চাঁদপুরে অনেক দর্শনীয় জায়গার মধ্যে বড় স্টেশন মোলহেড অন্যতম। মোলহেডের সাথে পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল সব বয়সী মানুষকে আকৃষ্ট করে চলছে। তাই মোলহেডের স্থানকে আরো আধুনিকায়ন ও দৃষ্টিনন্দন করতে রেলওয়ে বিভাগ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। মোলহেডের অধিকাংশ ভূমি রেলওয়ের। পূর্বদিকে রেল স্টেশন, দক্ষিণে ডাকাতিয়া নদী ও তার পাশে দেশের বৃহৎ মাছঘাট, যেখানে রূপালি ইলিশের বিপণন কেন্দ্র। মোলহেডের পশ্চিমে রয়েছে বিশাল পদ্মা-মেঘনা নদী। অসংখ্য ভ্রমণপিপাসুকে আকৃষ্ট করছে এই তিন নদীর মিলনস্থল। বর্তমানে নদীর পানি কমে যাওয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিভিন্ন চরও ভ্রমণকারীদের আকর্ষণ করছে। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে মোলহেডের নানা উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। ১৩শ’ ফুট অত্যাধুনিক ওয়াকওয়ে করার কাজ করা হচ্ছে।রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পূর্ত)-এর অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, বড় স্টেশন মোলহেডকে আকর্ষণীয় করতে সেখানে গ্রিলের রেলিং, অত্যাধুনিক ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণ, পার্কিং টাইলস বসানোসহ প্রায় পঞ্চাশটি বসার বেঞ্চ, মাঝখানে একটি গোলচক্করের ঘর নির্মাণ করা হবে। যার উপরে ছাতার ন্যায় থাকবে। যাতে বৃষ্টি হলে দশনার্থীরা সেখানে বসতে পারেন। তিনি আরো জানান, এখানে একটি আকর্ষণীয় পানির ফোয়ারা করা হবে। এছাড়া বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্যে নদীর সাথে ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখা হবে। চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে রূপ দিতে রেলওয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিহাদ এন্টারপ্রাইজ এসব উন্নয়নমূলক কাজ করছে।
আমরা রেলওয়ের উপরোল্লিখিত প্রকৌশলীর বক্তব্যে দেয়া সময়মত চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড দৃষ্টিনন্দন করার কাজ শেষ হোক সেটা প্রত্যাশা করি। এই মোলহেডে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল পার্ক করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পর্যটন কর্পোরেশন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভাকে এখানে এই পার্ক করার সুযোগ না দিয়ে রেলওয়ে বস্তুত মোলহেডকে দৃষ্টিনন্দন করার নামে সেই পার্কের কাজই করছে। জাতির পিতার নামের পার্কের কাজ তাই গুরুত্ব দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে শেষ করবে- এটা অবশ্যই আশা করা যায়। আর সেটি করলে নিশ্চয় বেশি কিছু হবে না।