সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

নিভে গেলো দীর্ঘস্থায়ী আলোকশিখা

নিভে গেলো দীর্ঘস্থায়ী আলোকশিখা
অনলাইন ডেস্ক

সম্মানের সাথে, শ্রদ্ধার সাথে, সুস্থতার সাথে, ব্যস্ততার সাথে কারো দীর্ঘজীবন লাভ করা একটি সমাজের জন্যে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায়। সে ব্যক্তিটি যদি হন সৎ জনপ্রতিনিধি, কমিউনিটি লিডার বা সমাজপতি কিংবা আদর্শ শিক্ষক, তাহলে তো কথাই নেই। ওই সমাজ শক্ত খুঁটি/অবলম্বন/অভিভাবক হিসেবেই মনে করে ওই ব্যক্তিটিকে। এমনটি মনে করার সুযোগপ্রাপ্ত সমাজ সত্যিই অনেক কম। যে সমাজ এমন সুযোগ প্রাপ্তিতে ধন্য, সে সমাজ যেনো ওই ব্যক্তিটিকে আলোকশিখা হিসেবে সর্বজনশ্রদ্ধেয় ভেবে আঁধারে পথ খুঁজে পাবার প্রয়াস চালায়। আলোকশিখারূপী এমন একজন ব্যক্তি হচ্ছেন বিজয় চন্দ্র দে। সত্যিই তিনি নামের সার্থকতা প্রতিপন্ন করার মতো একজন মানুষ, যিনি জীবনের পরিধিকে শতবর্ষ অতিক্রম করাতে সক্ষম হয়েছেন তথা জীবনযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছেন। যাঁকে সবাই জানে শতবর্ষী শিক্ষাগুরু ‘বিজয় স্যার’ হিসেবে।

বিজয় চন্দ্র দে অবশেষে জীবনের কাছে স্বাভাবিক পরাজয় মানলেন। গত ২৩ আগস্ট সকাল পৌনে ১০টায় তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়িতে বার্ধ্যক্যের কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ১০২ বছর। তিনি আপাদমস্তক ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক। ১৯১৯ সালে জন্মগ্রহণকারী বিজয় চন্দ্র দে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেই শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। শিক্ষকতা করেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। ষাটের দশকে চলে আসেন নিজ এলাকায়। প্রথমে প্রত্যাশী, পরে ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ফরক্কাবাদে ৩১ বছর প্রধান শিক্ষক পদে থেকে ১৯৮৮ সালে অবসরগ্রহণ করলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়েননি। উপদেষ্টার মর্যাদা দিয়ে প্রায় তিন দশক তাঁর শিক্ষকতার সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তাঁকে দিয়ে ক্লাস করিয়েছেন। ইংরেজির নামকরা শিক্ষক হিসেবে তাঁর ব্যুৎপত্তি ছিলো আকাশচুম্বী। তিনি ফরক্কাবাদ কলেজেও পড়িয়েছেন ইংরেজি। ফরক্কাবাদসহ সন্নিহিত অঞ্চলের সমাজের জন্যে তিনি একজন আদর্শ প্রবীণ শিক্ষক হিসেবে ছিলেন যেনো উজ্জ্বল আলোকশিখা। এ শিখায় কতো শিক্ষার্থীর প্রাণ যে আলোকিত হয়েছে, সজীব হয়েছে, সফল হয়েছে তার হিসেব মিলানো কঠিন।

বিজয় চন্দ্র দে’র মতো আলোকশিখারূপী সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের প্রতি সমাজের লোকজনের প্রত্যাশা থাকে অস্বাভাবিক। তিনি একশ’ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থেকে নিশ্চয়ই সে প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। মৃদুভাষী, বিনয়-শোভন, নিভৃতচারী, শৃঙ্খলাপরায়ণ বিজয় চন্দ্র দে ছিলেন অজাতশত্রু। তাঁর মতো লোক সমাজে হাজারে নয়, দশ লক্ষেও একজন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাঁর মৃত্যুতে আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তাঁর স্মৃতি অমলিন রাখার জন্যে যে কোনো প্রয়াস গ্রহণ বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়