প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
বাজার কমিটি পুনর্গঠন প্রসঙ্গে
বাজারকে নিকৃষ্টতম জায়গা বলা হলেও অধিকাংশ মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে যাওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। এই বাজার পরিচালিত হয় সাধারণত কমিটি দ্বারা। যে বাজারের কমিটি ভালো, সে বাজারের পরিবেশ ভালো-এটা প্রচলিত একটি কথা। এ পরিবেশের মধ্যে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা, ক্রেতাবান্ধব বিক্রেতা তথা ব্যবসায়ী, খাঁটি পণ্যের সমারোহ, স্বচ্ছন্দ চলাচল, নিরাপত্তাসহ অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত।
|আরো খবর
চাঁদপুর শহরের অন্যতম প্রধান ও প্রাচীন বাজার হিসেবে পরিচিত পালবাজার। এ বাজারটি দীর্ঘদিন যাবৎ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচিত ও স্বঘোষিত কমিটি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে এ বাজারের পরিবেশ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নেই এবং উন্নয়নও নেই। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এ বাজারের উন্নয়নের দাবি তোলার মতো জোরালো ও সম্মিলিত আওয়াজ নেই।
বর্তমানে কী অবস্থা সেটা জানা নেই, তবে এক সময় এটা জানা ছিলো যে, হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজার ভালো গরু কেনার জন্যে প্রসিদ্ধ হলেও সেখানে ভালো গরুর মাংস কেনা যেতো না। ভালো গরুর মাংস কিনতে হলে শাহরাস্তির উয়ারুক বাজার এবং কুমিল্লার মুদাফরগঞ্জ বাজারে যেতে হতো। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, এ দুটি বাজারের কমিটি এতোটা শক্তিশালী ছিলো যে, কমিটির নেতৃবৃন্দকে গরুর চেহারা দেখানো ছাড়া অর্থাৎ ভালো গরু কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করা ছাড়া কসাই গরু জবাই করতে পারতো না।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ বাজারের কমিটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গঠনের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে ছিলো। এজন্যে বাজারের উন্নয়নও থমকে ছিলো। যে কারণে এ বাজারটি গণমাধ্যমের সংবাদের উপজীব্য হয়েছে বার বার। অবশেষে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মাহফুজুল হক উক্ত বাজার কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করেন। বর্তমানে বাজারটি কেমন চলছে সেটি আমাদের আপাতত জানা না থাকলেও গণমাধ্যমে যেহেতু নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে না, সেহেতু মোটামুটি ভালো চলছে বলে ধারণা করা যায়।
রোববার শাহরাস্তি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে বাজার কমিটি পুনর্গঠন। সাধারণত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কোনো কমিটির সভায় বাজার কমিটি গঠন বা পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় না। নিশ্চয়ই এই উপজেলার বাজারগুলোর বিদ্যমান কমিটি নিয়ে সমস্যা অনুভূত হওয়ায় পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক ও যথার্থ বলে মনে করি। সকল উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সভায় বাজারের কমিটি, পরিবেশ, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হওয়া উচিত। এতে ক্রেতা-ভোক্তার স্বার্থরক্ষা যেমন হবে, বাজারের সুনাম ও প্রসিদ্ধিও ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করি।