প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
এতোদিন কোথায় ছিলেন?
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, অব্যাহত প্রবল বর্ষণে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে মারাত্মক জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে ১১শ’ ১৯ হেক্টর ফসলি জমি। তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন বলেছেন, জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। আমরা বিভিন্নভাবে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি। প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পানি নিষ্কাশন করা হলে নির্ণয় করা যাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা না নিলে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন, জলাবদ্ধতার শিকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। ফসলি জমি, মৎস্য খামার, রাস্তা ও বাড়ি তলিয়ে আছে। নিষ্কাশন খালগুলোতে বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও সংস্কার না করায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পর থেকে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে বার বার লিখার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না।
|আরো খবর
অবশেষে একজনের টনক নড়েছে। তিনি হচ্ছেন মতলব উত্তর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তিনি স্বেচ্ছায় ছেঙ্গারচর বাজার সংলগ্ন মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নিষ্কাশন খালে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কারের উদ্যোগ নেন। ১০ আগস্ট মঙ্গলবার ছেঙ্গারচর বাজারে কৃষি ব্যাংকের সম্মুখ থেকে খাল পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, খাল-নালা হলো পানি চলাচলের পথ। কিন্তু অনেকেই অসচেতনভাবে খালে-নালায় ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এ খাল এখন কচুরিপানা, ময়লা-আবর্জনা ও মশার প্রজনন আখড়ায় পরিণত হয়েছে। একদিকে করোনা মহামারির সংক্রমণ বেড়েছে, অপরদিকে মশার উপদ্রবে যদি ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। উক্ত বাজারের ব্যবসায়ী ইয়াছিন বলেন, নিষ্কাশন খালে কচুরিপানা আছে, তার ওপর বাজারের ময়লা ফেলা হয়। এতে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। সাইফুল ভাইয়ের অর্থায়নে কিছু অংশ পরিষ্কার করা হচ্ছে। সাইফুল ভাইয়ের দেখাদেখি আরো ক’জন উদ্যোগ নিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
ব্যবসায়ী ইয়াছিনের বক্তব্যের সাথে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিভিন্নভাবে ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো খনন, সংস্কার ও পুনরুদ্ধারে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কার্যকর ভূমিকা না নেয়ায় বছরের যে কোনো সময় প্রবল বর্ষণ হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় ছেঙ্গারচর পৌরসভা, ছেঙ্গারচর বাজার কমিটি, কোনো ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা পরিষদ এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি। অবশেষে সাড়া দিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম। তিনি সরকারি কর্তৃপক্ষসমূহের নীরবতায় একটি নিষ্কাশন খালের কিছু অংশ পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়ে কার্যত আরো অনেককে উদ্বুদ্ধ করার মতো কাজটি করেছেন। এমন কাজই সর্বত্র করা দরকার। সাইফুল ইসলামের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কেউ কেউ বলেছেন : এতোদিন আপনি কোথায় ছিলেন? আমরা মনে করি, দেশের সর্বত্র দীর্ঘদিনের যে কোনো সমস্যা সমাধানে সরকারি কর্তৃপক্ষের নীরবতায় কারো না কারো কোনো উদ্যোগ নেয়া দরকার। এতে ঊর্ধ্বতন মহলের টনক না নড়া ছাড়া উপায় নেই।