প্রকাশ : ১১ মে ২০২৩, ০০:০০
নামফলক ভাঙ্গা যায়, কিন্তু উন্নয়ন কি ভাঙ্গা যায়?

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের অন্যতম সংবাদ শিরোনাম ছিলো ‘রাস্তা উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নামফলক ভাংচুর’। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, শাহরাস্তিতে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের উন্নয়ন কাজের নামফলক ভাংচুর করা হয়েছে। ৮ মে সোমবার দুপুরে চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের কোয়ার মিয়াবাড়ি থেকে নুনিয়া সড়কের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতকারীরা নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলে। ৯ মে সকালে নামফলকটি ভাংচুরের দৃশ্য দেখে এলাকা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি ফারুক হোসেন ও ইউপি চেয়ারম্যান জোবায়েদ কবির বাহাদুর শাহরাস্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ হোসেন জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
|আরো খবর
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার মোঃ আনোয়ার বলেন, বিষয়টি আমি স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে জানতে পারি। যারা এগুলো ভাংচুর করেছে, তারা সরকারের উন্নয়নবিরোধী দুর্বৃত্ত। আমি এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করছি। ঘটনাটির ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।
আমরা নামফলক ভাঙ্গার মাধ্যমে কারো উন্নয়নবিরোধী ক্ষোভকে সমর্থনযোগ্য মনে করি না। কারণ, এতে নির্দিষ্ট উন্নয়ন পূর্ব পরিকল্পনায় সম্পন্ন হতে বা করাতে কোনো সমস্যা হয় না। যে কোনো উন্নয়ন সম্পাদনের আগে পরিবেশ প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া যাচাইয়ের অনিবার্যতা রয়েছে। উন্নত রাষ্ট্র্রে ছোট-বড় যে কোনো প্রকল্পে এই অনিবার্যতা মানা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে খুব বড়ো প্রকল্প না হলে সাধারণত সেটা মানা হয় না। সেজন্যে কখনও কখনও উন্নয়নবিরোধী ক্ষোভ নানাভাবে পরিলক্ষিত হয়। যেমন : গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান, মানববন্ধন, মিছিল, সভা-সমাবেশ, নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অফিসের সামনে অবস্থান কিংবা ঘেরাও ইত্যাদি। এতে কারো না কারো টনক নড়ে, চিন্তার জগতে সামান্য হলেও ঢেউ উঠে। কিন্তু নামফলক ভাঙ্গা, উন্নয়ন কাজে সরাসরি বাধা প্রদানের মাধ্যমে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না, বরং জেদ বাড়ে এবং প্রতিরোধের মানসিকতা তৈরি হয়। সবচে’ বড়ো কথা, কারো ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভের বিকৃত বা উৎকট প্রকাশ ঘটে, যেটা অন্যান্য সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মনোযোগ আকর্ষণের চেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মনোযোগ কাড়ে বেশি। কারণ, রাতের আঁধারে তথা অপ্রকাশ্যে নামফলক ভাঙ্গা নিতান্তই দুর্বৃত্তপনা, যেটি কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। আমরা ক্ষমার অযোগ্য দুর্বৃত্তপনার সাথে সংশ্লিষ্টদের শায়েস্তা করতে দ্রুত পদক্ষেপ চাই। এ ক্ষেত্রে কারো ব্যর্থতা ও শৈথিল্য কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।