সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

এমনটি হতে থাকলে এজেন্ট ব্যাংকিং আস্থা হারাবে
অনলাইন ডেস্ক

সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকদের কম-বেশি ভিড় থাকে। এতে অনেক গ্রাহক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। সেজন্যে ব্যাংকিং কার্যক্রমকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে চতুর্মুখী ও সহজ যোগাযোগসমৃদ্ধ স্থানে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ইতিবাচক হিসেবেই সাধারণ মানুষ নিয়েছে। এতে গ্রামীণ গ্রাহকরা অনেক স্বস্তি অনুভব করেছে, যেমনটি সমবায় বিভাগের নিবন্ধনভুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতি তথা মাল্টিপারপাসেও করেছিল। কিন্তু সারাদেশের অধিকাংশ স্থানে মাল্টিপারপাসে প্রতারিত হওয়াজনিত অস্বস্তিতে ভোগা গ্রাহকরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকেছিল। কিন্তু হায়! সেই এজেন্ট ব্যাংকিংকে রহস্যজনক চুরি, স্বয়ং এজেন্টের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়া এবং লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়ানোর ঘটনা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সম্প্রতি বাগাদী চৌরাস্তার ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এজেন্টের প্রতারণার ঘটনা মন থেকে মুছে যেতে না যেতেই গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠ পড়ে জানা গেলো আরেকটি এজেন্টের অপকর্মের খবর।

‘শাহরাস্তিতে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও’ শিরোনামে মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল লিখেছেন, শাহরাস্তি উপজেলার মেহার কালীবাড়ি বাজারে অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। সংবাদ পেয়ে ভুক্তভোগীরা এজেন্ট শাখায় এসে বিক্ষোভ করে। ভুক্তভোগী বেশ ক’জন জানান, তাদের সঞ্চয়পত্রের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক এশিয়ার কালীবাড়ি বাজারের এজেন্ট হৃদয় চন্দ্র পাল উধাও হয়ে গেছেন। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে গ্রাহকরা এজেন্ট শাখায় জড়ো হতে থাকেন। এ সময় বেশ ক’জন দাবি করেন প্রায় কোটি টাকার অধিক অর্থ নিয়ে হৃদয় উধাও হয়ে গেছে। এছাড়াও আরো বেশ কিছু গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান হৃদয়। এশিয়া ব্যাংকের জেলা ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত চলছে। কতো টাকা হৃদয় জালিয়াতি করেছেন তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। গ্রাহকগণ যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রচার-প্রসারহেতু দেশের ব্যাংকিং খাতে এটি একটি আশাজাগানিয়া বিষয় হিসেবে জনমনে ও সুধী মহলে নিঃসন্দেহে সাড়া জাগিয়েছে। সারা দেশের সামগ্রিক চিত্র কী সেটা বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে চাঁদপুর জেলায় এজেন্ট ব্যাংকিং সাম্প্রতিক সময়ে বিরূপ আলোচনার বিষয়ে যে পরিণত হয়েছে, সেটি গত দুই বছরে জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত নানা অঘটনে অনুধাবন করা যাচ্ছে। সুপ্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ব্যাংকের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কিছু এজেন্ট তাদের অপকর্ম দ্বারা এজেন্ট ব্যাংকিংকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এজেন্ট নির্বাচনে সুষ্ঠুতা রক্ষা না করায়, না যথাযথ তদারকি কিংবা নজরদারির অভাবে এমনটি হচ্ছে সেটা নিয়ে সুধী পর্যবেক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রশ্নের সমাধান করা না হলে এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পক্ষে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ না দাঁড়ালে এজেন্ট ব্যাংকিং যে ক্রমশ আস্থা হারাবে তাতে কোনো সন্দেহে নেই। খেয়াল রাখতে হবে, দুঃসংবাদ বা দুর্নাম বাতাসের আগে ধায়। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের দুর্নামের ধেয়ে চলা তাই থামিয়ে রাখা যাবে না। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কার্যপরিধি, সীমাবদ্ধতা ও গ্রাহকদের করণীয় ও সতর্কতা সম্পর্কে গণমাধ্যমে জানান দেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেয়া জরুরি বলে আমরা মনে করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়