প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর শহরে দিনের বেলা চুরি পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও কোনো কোনো পাড়া-মহল্লায় রাতের বেলা চুরি পুরোপুরি বন্ধ বা অনেক হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে গত ২৩ বছরের অধিক সময় ধরে চাঁদপুর শহরে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল কার্যক্রম চালু থাকার ফলস্বরূপ হয়েছে। এই টহলের কারণে চাঁদপুর শহরে রাতের বেলা ছিনতাইয়ের ঘটনাও শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে। কদাচিৎ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও সেটা কমিউনিটি পুলিশিং টহল সদস্যরা ভোরবেলা ডিউটি ছেড়ে বাড়ি যাবার পর ঘটছে। সেজন্যেই তো বলা হয়, দিনের চাঁদপুরের চেয়ে রাতের চাঁদপুর অধিক নিরাপদ। চাঁদপুর শহরের নাগরিক জীবনে নৈশকালীন নিরাপত্তায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের এমন যখন সুনাম, তখন গুয়াখোলায় যুগ্ম জজের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনাটি উদ্বগজনকই বটে।
এ ব্যাপারে শুক্রবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে লিখা হয়েছে, গুয়াখোলায় লক্ষ্মীপুর জেলার যুগ্ম জজ মোঃ মনির হোসাইনের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ছিঁচকে চোরচক্র বসতঘরের এগ্জস্ট ফ্যানের গ্রিল ভেঙ্গে প্রবেশ করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে। ২৫ জানুয়ারি বুধবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছে। এই ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন দুই ছিঁচকে চোরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করেছে। যুগ্ম জজ মোঃ মনির হোসাইনের মা নাসরিন সুলতানা বেগম জানান, বাড়িতে তিনি এবং তার দুই পুত্র, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। আর আমার ছেলে যুগ্ম জজ মোঃ মনির হোসাইন লক্ষ্মীপুর এবং বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকায় বসবাস করেন। ফলে তাদের বসবাসের কক্ষগুলো তালাবদ্ধ থাকে। তিনি আরো জানান, প্রতিদিনের ন্যায় রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে আমি এবং ছোট ছেলে মানিকসহ বড় ছেলেদের ফ্ল্যাটের দরজা খুলতে গেলে দেখি, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ রয়েছে। পরে পেছনের দরজা টান দিতেই সেই দরজা খুলে যায়। আমরা ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখে চুরির বিষয়টি বুঝতে পারি। চোরচক্র স্টিলের আলমারির ওয়ার্ডরোবের তালা ভেঙ্গে বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ অর্থ নিয়ে গেছে। অন্য ড্রয়ারগুলাতে আর কোনো কিছু ছিলো কিনা সেটি তিনি নিশ্চিত হতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, ছেলের বৌ বাড়িতে এলে কী কী চুরি হয়েছে সেটি নিশ্চিত হতে পারবো। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সকালে পুলিশের ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তবে ঘরগুলোতে লোকজন না থাকায় কী কী চুরি হয়েছে সেটি ভুক্তভোগী পরিবার নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। এরপরেও বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পার্শ্ববর্তী ২ যুবককে থানায় আনা হয়েছে।
আমাদের বিশ্বাস, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ যুগ্ম জজের বাসায় চুরির সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থতায় চোরদের সাহস বেড়ে যাবে। তারা চাঁদপুর শহরে রাতের বেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের টহলকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের চুরির পরিকল্পনায় একের পর এক সফলতা খুঁজবে। এটা নিঃসন্দেহে হবে উদ্বেগজনক। এ উদ্বেগ নিরসন করার জন্যে কমিউনিটি পুলিশিং টহল সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।