প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্প অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতার অবসান চাই

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ‘চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজার এলাকা পরিদর্শনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের টীম ॥ ৩ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার শহর রক্ষাবাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে’ শীর্ষক সংবাদটি দেখে অধিকাংশ চাঁদপুর শহরবাসী অনেক খুশি হয়েছেন। কিন্তু চলমান শুষ্ক মৌসুমে উক্ত প্রকল্পের কাজ শুরুর সম্ভাবনা যে আর নেই সেটি সংবাদের গভীরে গেলে পাঠকের বুঝতে আর অসুবিধা হয় না। বস্তুত সেখানেই হতাশা এবং আফসোস।
|আরো খবর
সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের পুরাণবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের একটি টীম। গত ১৫ জানুয়ারি রোববার বেলা সাড়ে বারোটার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ শফিউল ইসলাম ও নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মাহতাব উদ্দিন শহর রক্ষাবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন করেন এবং ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভিত্তিতে করা কাজের স্থানও পর্যবেক্ষণ করেন।
কর্মকর্তাগণ প্রথমে পরিদর্শন করেন বাজার এলাকায় অবস্থিত দোল মন্দির প্রাঙ্গণস্থ শহর রক্ষা বাঁধের অংশ। এরপর যান হরিসভা এলাকায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর-এর নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল জানান, গেল বর্ষার সময় শহর রক্ষাবাঁধের পুরাণবাজার দোল মন্দির ও হরিসভা এলাকায় মেঘনার ভাঙ্গন হলে জরুরি ভিত্তিতে এ দুটি পয়েন্টে বালুভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপন করা হয়েছিল। সেই কাজের অগ্রগতি ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে দেখে গেছেন।
তিনি বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে আমরা শহর রক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিতকরণের ওপর সার্ভে করেছি। সেই সার্ভে রিপোর্ট হেড অফিসে পাঠিয়েছি। সেই অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ অংশ চিহ্নিত হলে অস্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামত কাজের জন্যে পরবর্তী প্রস্তাবনা পেশ করা হবে। চাঁদপুর শহরকে স্থায়ীভাবে রক্ষার প্রকল্পটি কোন্ পর্যায় রয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল বলেন, চাঁদপুর শহর রক্ষা পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্যে আমরা ইতঃমধ্যে মন্ত্রণালয় ডিপিপি পাঠিয়েছি। বর্তমানে সেটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এ প্রজেক্ট দেয়া হয়। তাতে শহর রক্ষাবাঁধের ৩ হাজার ৩৬০ মিটার প্রতিরক্ষামূলক কাজসহ প্রায় ১৩ কিলোমিটার ড্রেজিং রয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে প্রকাশ, চলমান শুষ্ক মওসুমে চাঁদপুর রক্ষা বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পটি যদি একনেক সভায় অনুমোদনও লাভ করে, তবুও শুষ্ক মৌসুমের বাকি সময়টাতে কাজ শুরু করাটা সম্ভব হবে না। আর সেটি না হলে সামনের বর্ষায় আবারো ভাঙ্গন ঝুঁকিতে থাকবে বাঁধটি। সেজন্যে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গন পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আগাম প্রস্তুতি রাখতেই হবে।
আমাদের কাছে চাঁদপুর রক্ষা বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পটি দীর্ঘসূত্রিতায় আক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে। আমাদের চাঁদপুর জেলার কৃতী সন্তান প্রফেসর ড. শামসুল আলম পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম পার্শ্ববর্তী জেলা শরীয়তপুরের। তারপরও উক্ত প্রকল্পটি অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতা ভাঙ্গন আতঙ্কে ভোগা প্রতিটি মানুষকে ভোগাচ্ছে মারাত্মক অপেক্ষার যন্ত্রণায়। এ অপেক্ষা কবে নাগাদ ঘুচবে সেটা আপাতত আন্দাজ করা যাচ্ছে না। সেজন্যে চাঁদপুর সদর আসনের এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সর্বাত্মক আন্তরিকতায় একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন করানো এবং সবচে’ কমে সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করানোর উদ্যোগগ্রহণের বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্যে আমরা শিক্ষামন্ত্রী সমীপে সনির্বন্ধ অনুরোধ পেশ করছি। মহান আল্লাহ তাঁকে এ অনুরোধ রক্ষার তৌফিক দান করুন-- চাঁদপুর শহরবাসীর পক্ষে নিরন্তর এ প্রার্থনা জানাচ্ছি।