বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

মতলব উত্তরে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে কথা
অনলাইন ডেস্ক

গতকাল দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ব্যানার হেডিং হয়েছে একটি সংবাদ এবং সেটি হচ্ছে ‘সড়কে মৃত্যু থামছে না ॥ সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে ॥ মতলব উত্তরের সড়কে দেড় মাসে ঝরলো ১০টি প্রাণ’। এ সংবাদে চাঁদপুর কণ্ঠের ব্যুরো ইনচার্জ মাহবুব আলম লাভলু লিখেছেন, গত ২৫ নভেম্বর ২০২২ থেকে ৬ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ১০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একজন শিশু ও একজন স্কুলছাত্রী রয়েছে। এ উপজেলায় দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে বেপরোয়া মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ট্রাক্টর ও ট্রলিগাড়ি চালকদের দৌরাত্ম্য। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে। যার ফলে একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে মৃত্যু থামছে না। এ উপজেলার সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবরোধ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হচ্ছে না। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে।

স্থানীয়রা মনে করছেন, লাইসেন্সবিহীন চালকরা বেপয়ারা ট্রলি গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। উভয়পক্ষের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহকে দাফনের অনুমতি দেয়া হয়। মামলা না হওয়ায় দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে যায়। ঘটনা ঘটনাই থাকে, অন্যায় অন্যায়ই থেকে যায়, কে দোষী, কে নির্দোষ এগুলো আর শনাক্ত করা যায় না। এ সমস্ত দুর্ঘটনার ব্যাপারে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত না করা হলে এমনিভাবেই অনেক মায়ের বুক খালি হতে থাকবে। আইনশৃঙ্খলা ও পুলিশ বাহিনী যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে অন্যায়কারীরা পার পেয়ে যায়।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, পরিবারের অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু বেপরোয়া চালকেরা গতিবিধি না মানার কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো হলো : ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাগুলো মূলত ঘটে বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিংয়ের চেষ্টা, বারবার লেন পরিবর্তন, ট্রাফিক আইন না মানা ও চলন্ত অবস্থায় মুঠোফোনে কথা বলার কারণে। হেলমেট ব্যবহার না করার কারণে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

মতলব উত্তরে সড়ক দুর্ঘটনার যে কারণসমূহ প্রাগুক্ত সংবাদটিতে উদ্ধৃত ও উল্লেখ করা হয়েছে, তার সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি না। তবে এটা তিক্ত হলেও বলছি, উল্লেখযোগ্য কারণ কিন্তু সংবাদটিতে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সেটি হচ্ছে, সাম্প্রতিক ক'বছরে মতলব উত্তরে সড়ক অবকাঠামো খাতে এতো বেশি উন্নয়ন হয়েছে, যে কারণে সড়কের মসৃণতায় যানবাহনগুলোর গতি বেড়েছে লাগামহীন এবং চালকরা হয়ে গেছে বেপরোয়া। হাজীগঞ্জ ও কচুয়ার মধ্যে সংক্ষিপ্ত মসৃণ ও প্রশস্ত সড়ক নির্মাণশেষে এই সড়কে গত ক’বছর ধরে লাগাতার দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর মিছিল যেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মতলব উত্তরে সড়কের উন্নয়নহেতু গত দেড় মাসে দুর্ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুতে তেমনই কিছু লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে মতলব উত্তরে আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত উদ্যোগগ্রহণ করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়