বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

যাতে সাংবাদিকদের অবদান স্পষ্ট
অনলাইন ডেস্ক

অসহায় মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সাংবাদিক তথা গণমাধ্যমকর্মীরা। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের দাপটে ও অন্যায় আচরণে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে মানুষ যখন আবেদন করে, অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া দূরের কথা, পাত্তাও পায় না, তখন চরম অসহায়ত্ব বোধ করে এবং তাদের আশ্রয়স্থল খুঁজে পেতে সাংবাদিকদের কাছে ধর্ণা দেয়। এতে তারা আশানুরূপ সাড়া পেলে ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি-সাহস খুঁজে পায়। যেমনটি পেয়েছে ফরিদগঞ্জের অসহায় একটি পরিবার। বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশের কারণে এ পরিবারটি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। প্রশাসনের আশ্বাসে আমরণ অনশন স্থগিত করেছে অসহায় এ পরিবারটি।

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদগঞ্জ অফিসার্স ক্লাবে ইউএনওর সাথে দীর্ঘ বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেয় ভুক্তভোগী পরিবারটি।

পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা, হামলার ঘটনায় পুলিশি ব্যবস্থা এবং ১৪৫ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক প্রদানকৃত রিপোর্ট প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২ জানুয়ারি থেকে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে শেখ ফরিদ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমরণ অনশনে বসে।

জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের অনশনকারী শেখ ফরিদ মৃধা ও ফয়েজ মৃধা পরিবারের সাথে পার্শ্ববর্তী ঢাকার মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাহার গংয়ের গত কয়েক বছর জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। শেখ ফরিদ জানান, তাদেরকে অন্যায়ভাবে পৈত্রিক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারার অংশ হিসেবে তাদের উপর গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে হামলা, ভাংচুর এবং দখলের চেষ্টা চললেও তারা প্রশাসন ও পুলিশ থেকে বাস্তবিক অর্থে কোনো সহযোগিতা পায় নি। ফলে তারা হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে বসেন।

অনশনের চতুর্থদিন বৃহস্পতিবার রাতে ইউএনও তাসলিমুননেসা অনশনকারীদের থানা পুলিশের মাধ্যমে স্থানীয় অফিসার্স ক্লাবে ডেকে নেন। সেখানে দীর্ঘ বৈঠকের পর ইউএনও তাদেরকে নৈতিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করায় তারা অনশন স্থগিত করেন। ওই বৈঠকে ইউএনও ছাড়াও থানার অফিসার ইনচার্জ আঃ মান্নান, ওসি (তদন্ত) প্রদীপ মণ্ডল, রূপসা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছারুল আলম কামরুল, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবু বকর সিদ্দিকী, প্রেসক্লাব সম্পাদক আব্দুস ছোবহান লিটন ও সিনিয়র সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে শেখ ফরিদ মৃধা শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, ইউএনও আমাদেরকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নৈতিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সাথে ইউপি চেয়ারম্যানও আমাদের বিষয় নিয়ে সহযোগিতা ও বৈঠক করার আশ্বাস দেন। তাই ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টির সুরাহার লক্ষ্যে আমরা আমাদের আমরণ অনশন স্থগিত করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুননেসা বলেন, শেখ ফরিদ মৃধারা আসলে ভুল পথে হাঁটছিল। তাই তাদেরকে বৃহস্পতিবার সকালে ডেকে একবার কথা বলেছি। পরে না শোনায় রাতে ওসি সাহেবের মাধ্যমে ডেকে এনে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে সঠিক দিশা দিতে সক্ষম হয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধানে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এছাড়া ডিসি মহোদয়ের সাথেও এই বিষয়ে কথা বলবো। শেষে তারা অনশন প্রত্যাহার করে রাতেই বাড়ি ফিরে যায়।

উল্লেখ্য, দুই পক্ষের এই বিরোধের জের ধরে গত ২০ ডিসেম্বর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে মামলা গ্রহণ না করলেও অনশন শুরুর পরদিন ৩ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করে থানা পুলিশ।

নির্জলা সত্য এই যে, শেখ ফরিদ মৃধা গংয়ের অভিযোগকে মামলা হিসেবে ফরিদগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে তখনই, যখন অভিযোগকারীরা ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মুখে আমরণ অনশনে বসেছে এবং সেটি পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছে। তারপরও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টিতে ভ্রূক্ষেপ করেনি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে লাগাতার সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকলে অবশেষে প্রশাসনের টনক নড়ে এবং তারা প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিয়ে আমরণ অনশনকারীদের নিবৃত্ত করে। এখন দেখার বিষয় এই আশ্বাস যথাসময়ে কার্যকর হয় কিনা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়