সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

এমন শত্রুতা উদ্ধার বন্ধ হতে পারে কীভাবে?
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারের এক মেয়ে প্রেমের টানে ছুটে যায় নোয়াখালীর এক চরে। সেখানে গিয়ে সে প্রতারিত হয় এবং ধর্ষণের শিকার হয়ে অবশেষে খুনও হয়। তার লাশ উদ্ধার হয় এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় খুনিও শনাক্ত হয়। অথচ রাতের অন্ধকারে আমাদের দেশে বোবা মাছ ও বোবা গাছ খুন হয়, কিন্তু খুনি শনাক্ত হয় না। কারণ, এমন বোবাদের খুনি শনাক্তে কেউ সাধারণত আইনের আশ্রয় নেয় না, আর কেউ আইনের আশ্রয় নিতে উপযুক্ত স্থানে গেলেও পাত্তা পায় না। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয় না। তদন্ত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বাদীর উদ্দেশ্যে ব্যঙ্গ করে বলেন, মানুষের খুনি শনাক্ত ও শায়েস্তা করার কাজে সময় দিয়ে কূল পাই না, আর গাছ-মাছের জন্যে সময় দেবো কোত্থেকে?

যে যতো কথাই বলুক, আমাদের দেশে কৃষিতে বিপ্লব আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর ‘মাটি ও মানুষ’ এবং চ্যানেল আইয়ের ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’, আর চাঁদপুরের কৃতী সন্তান মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজসহ তাঁর সহযোগীদের যুগান্তকারী ভূমিকা রয়েছে। এ ভূমিকার কারণে কতো বেকার যুবক, কতো বিদেশ ফেরত মানুষ মাছ চাষ, মোরগ-মুরগি ও গরু পালন করে যে স্বাবলম্বী হয়েছে, তার সঠিক চিত্র তুলে ধরাটা আনন্দদায়ক। আর মাছ চাষ করে সাফল্য অর্জনকারীদের কেউ কেউ ঈর্ষার শিকার হয়ে কিংবা শত্রুতাবশত যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হচ্ছে সেটার বিবরণ তুলে ধরাটা রীতিমত হৃদয় বিদারক। রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্ত প্রকৃতির কেউ একটা বিষের বোতল পুকুর, দিঘিতে ফেলে দিতে পারলেই হলো, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লাফালাফি করে মাছগুলো সব মরে যায়। ক্ষয়ক্ষতি হয় ব্যাপক। এমন অদৃশ্য দুর্বৃত্তদের কেউ ধরা পড়েছে বলে শোনা ও দেখা যায় না বললেই চলে।

মাছ মেরে ঈর্ষা প্রকাশ কিংবা শত্রুতা উদ্ধারের অসংখ্য ঘটনার পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গাছের চারা কিংবা বাড়ন্ত গাছ কেটে শত্রুতা উদ্ধারের ঘটনাও বাড়ছে। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এমন ঘটনা একের পর এক ঘটে চলছে। দুর্বৃত্তরা এতোদিন ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে শত্রুতা উদ্ধারের জন্যে বিরোধপূর্ণ জমিতে রোপিত গাছ কাটলেও বর্তমানে সরকারি রাস্তার পাশে বিদ্যমান ফলবান বৃক্ষের ওপরও হাত দিয়েছে। তেমন ঘটনাও ঘটেছে ফরিদগঞ্জেই। গত শনিবার দিবাগত রাতে ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের কালির বাজার-কাটাখালী সড়কের পূর্ব পোয়া দাসপাড়ার সামনে থেকে চৌকিদার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারব্যাপী এলাকায় কয়েকশ’ কলাগাছ রাতের আঁধারে কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের শনাক্তকরণে ব্যবস্থা নেবে বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় না।

গাছ ও মাছের ওপর শত্রুতা উদ্ধারের ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। কিন্তু এর নেপথ্য নায়কদের ধরা যাচ্ছে না। এমন ঘটনা সংঘটনের সম্ভাব্য সময়ে ঘটনাস্থলে কোন্ কোন্ নম্বরের মোবাইল ফোনধারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ছিলো, সেটি তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চিহ্নিত করা এখন আর কঠিন কাজ নয়। কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য, এ ব্যাপারে বহুবিধ কাজে ব্যস্ত পুলিশের মাঝে আগ্রহ দেখা যায় কম। আমরা এ ব্যাপারে র‌্যাবকে অনুসন্ধানী ও গবেষণামূলক তৎপরতা চালানোর উদ্যোগ নিতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়