প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
মনুষ্য সমাজে কতো কিছু নিয়েই না পারস্পরিক বিরোধ থাকে। তার মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ উল্লেখযোগ্য। সংবাদপত্র ও টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমেই এই বিরোধ সংক্রান্ত সংবাদ সবচে’ বেশি প্রকাশিত হয়। এমন একটি সংবাদ হচ্ছে ‘ফরিদগঞ্জে কবরস্থানের দেয়াল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ১৫’। এ সংবাদটি ৩০ অক্টোবর রোববার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হয়।
এ সংবাদে লিখা হয়েছে, গত ২৯ অক্টোবর শনিবার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন ৩নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের ঠাকুর বাড়িতে কবরস্থানের দেয়াল নির্মাণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষে নারী-পুরুষসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ ও কুমিল্লার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার্থে নেয়া হয়েছে। কবরস্থানে জায়গা নিয়ে বিরোধ ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন এক পক্ষ দেয়াল নির্মাণ করতে গেলেই এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। জাতীয় জরুরি সেবার ‘৯৯৯’-এ ফোন করার প্রেক্ষিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করলে সংঘর্ষের প্রচণ্ডতায় কেউ না কেউ কবরে যাবার উপক্রম হতো।
সংঘর্ষে লিপ্ত একটি পক্ষ হচ্ছে সিরাজ মিয়া গং। তারা বলেন, আমরা প্রতিপক্ষের বহু আগে ঠাকুর বাড়িতে এসেছি। কবরস্থানের দুই দাগে ১৬ শতাংশ জায়গা নিয়ে কোর্টে রেকর্ড সংশোধনীর মামলা চলমান এবং সে মামলায় প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল। কিন্তু প্রতিপক্ষ আবুল কালাম গং ভাড়া করে লোকজন এনে জোরপূর্বক আমাদের পুরাতন দেয়াল ভেঙ্গে সেখানে নতুন ইটের দেয়াল তৈরি করতে গেলে আমরা বাধা দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালালে আমাদের পরিবারের ১০জন আহত হয়। অন্যদিকে আবুল কালাম গংয়ের বক্তব্য হচ্ছে, আমরা পূর্বের মামলায় রায় পেয়ে কাজ শুরু করেছি। কিন্তু প্রতিপক্ষ সিরাজ মিয়া গং ফনিসাইর এলাকা থেকে ভাড়া করে লোক এনে এবং পুলিশে খবর দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাদের একাধিক লোককে মেরে হাসপাতালে পাঠায়।
দুনিয়ায় মানুষের অবস্থান যে ক্ষণিকের সেটা পরকালে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষই অনুধাবন করেন। অনন্ত সময়ের পরকালে পৌঁছতে মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হয় এবং চিরস্থায়ী আবাসন হিসেবে অন্যের সহায়তায় কবরে গিয়ে ঠাঁই নিতে হয়। সেই কবরের স্থান নিয়েও যখন বিরোধ দেখা যায়, সংঘর্ষ বাঁধে তখন প্রত্যক্ষদর্শী কিংবা যে কোনো পর্যায়ের শ্রোতাকে এবং এ সংক্রান্ত সংবাদের পাঠককে বিস্ময়ে বিমূঢ় হতে হয়। ফরিদগঞ্জের সুবিদপুরে কবরস্থানের ভূমি নিয়ে বিরোধ, মামলা ও সংঘর্ষের যে প্রেক্ষাপট তার সুষ্ঠু সমাধান না হলে যে কাউকে না কাউকে এ বিরোধে প্রাণ দিয়ে কবরে যেতে হবে না-এটার নিশ্চয়তা দেয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া অবশ্যই দুষ্কর। আমরা উক্ত কবরস্থান নিয়ে বিরোধের শান্তিপূর্ণ ও টেকসই নিষ্পত্তির জন্যে সংশ্লিষ্ট আদালতের যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সাথে সাথে কাউকে না কাউকে সমঝোতার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।