শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শাহরাস্তিতে জেলা ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার, চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় প্রেরণ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

তার এ আনন্দ-অভিব্যক্তি সংগত
অনলাইন ডেস্ক

মানুষের আনন্দ-অভিব্যক্তির নানা রকমফের রয়েছে। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, নির্বাচনে বিজয়, ব্যবসায় মুনাফা অর্জন, সন্তান লাভ, সন্তানের সাফল্য, খেলাধুলায় জয়লাভসহ অসংখ্য কারণে মানুষ তার আনন্দ-অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। কিন্তু কেউ যদি নির্বাচনে হেরে গিয়ে আনন্দ-অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, সেটি দেখে অন্যদের বিস্মিত হতে হয় কিংবা থমকে দাঁড়াতে হয়। ফরিদগঞ্জে গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩নং ওয়ার্ডের এক সদস্য প্রার্থী ২১১ ভোটের মধ্যে মাত্র ২ ভোট পেয়ে আনন্দে ভেসে তেমনই বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন।

এই ব্যতিক্রম প্রার্থীর নাম মিজানুর রহমান সজিব। তার বাড়ি গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামে। নির্বাচনে তার বিজয়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও তিনি ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েই ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ ওয়ার্ডে তিনিসহ প্রার্থী ছিলেন মোট ৪ জন। বাকি তিন প্রার্থী ছিলেন প্রভাবশালী, যারা নির্বাচন করতে গিয়ে অনেক বেশি খরচ করেছেন। যেমনটি সজিব করেননি। তিনি নির্বাচন শেষে ফলাফল দেখে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেছেন, ভাই! ভোটারদের টাকা দেয়া ছাড়া ২ ভোট পেয়েছি। এই আনন্দে আমি ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তুলে আমার ফেসবুক আইডিতে আপলোড করে স্বস্তিতে আছি। তিনি লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ নির্ভেজাল পুরস্কার’।

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান, ৩ জন নারী সদস্য ও ৮ জন পুরুষ সদস্যসহ মোট ১২ জন জয়লাভ করেছেন। সারা জেলায় মোট ভোটার ছিলো ১২ শতাধিক। এই ভোটাররা হচ্ছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যেমন : উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ। কথিত আছে, এ সকল জনপ্রতিনিধির মধ্যে কম সংখ্যকই প্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা গ্রহণে বিরত ছিলেন, আর বিরাট সংখ্যকই টাকা গ্রহণ করে ভোট দিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ যে প্রার্থী বেশি টাকা দিয়েছেন তাকে ভোট দিয়েছেন, আর যে প্রার্থী কম টাকা দিয়েছেন তাকে ভোট দেননি। সেজন্যে কোনো কোনো ভোটার থেকে বিজিত প্রার্থীদের টাকা ফেরত চাওয়া, এমনকি আদায়ের ঘটনাও ঘটেছে। আবার কোনো কোনো প্রার্থী জাল টাকা দিয়ে ভোট কিনে ভোটারদের প্রতারিত করায় ভোটারদের তোপের মুখে পড়ার ঘটনাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। হয়তো এ ঘটনা গণমাধ্যমের খবরেও পরিণত হতে পারে।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাচনে পাঁচজন সদস্য প্রার্থী শূন্য ভোট পেয়েছেন। তারা টাকা খরচ করেও এমন পরিণতি বরণ করেছেন কিনা সেটা জানা না গেলেও ফরিদগঞ্জের সদস্য প্রার্থী মিজানুর রহমান সজিব যে টাকা খরচ না করেও দুই ভোট পেয়েছেন সেটা তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন। টাকার কাছে ভোট বিক্রি করার গড্ডালিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে দিয়ে যে দুজন সততার পরিচয়ে সজিবকে ভোট দিয়েছেন, সেটা নির্মোহ ও নির্ভেজালভাবেই করেছেন। অবশ্যই অন্ধকারে এ দুই ভোটার আলো ছড়ানো উজ্জ্বল প্রদীপের মতোই। এজন্যে প্রার্থী সজিবের আনন্দ-অভিব্যক্তির সাথে সাথে আমরা এ দু ভোটারকে স্যালুট জানাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়