প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
এ কথা স্পষ্ট করেই বলা যায়, আমাদের দেশে ফসলি মাঠের সংখ্যা যেমন কমছে, খেলার মাঠের সংখ্যাও কমছে। বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ার প্রয়োজনে ফসলি মাঠ ব্যক্তি উদ্যোগে যেমন ব্যবহার করা হচ্ছে, তেমনি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। আর খেলার মাঠ দখল হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীদের ক্ষমতায়, কোথাও কোথাও অবৈধ দখলবাজ ভূমিলিপ্সুদের অপশক্তিতে। খেলার মাঠকে পুরোপুরি বিলীন করে দেয়ার ঘটনাও ঘটে চলছে। যেমন চাঁদপুর শহরের কোর্ট স্টেশনের পশ্চিম দিকে রেলওয়ের চৌদ্দ কোয়ার্টারের মাঠটি এক সময় হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ থেকেও বেশি ব্যবহৃত হতো। যখনই এ মাঠের ব্যবহার হ্রাস পেলো, তখনই এ মাঠের পাশর্^বর্তী রেল কোয়ার্টারের কিছু বাসিন্দাসহ অন্যরা অনেকটা খাবলেই তুলে নিলো মাঠের মাটিগুলো। সৃষ্টি হলো গর্ত এবং তার পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় গড়ে তোলা হলো। রেল কর্তৃপক্ষ চেয়ে চেয়ে দেখলো, আর ক্রীড়াপ্রেমী মানুষগুলো দুঃখ পেলো এবং অন্য সকলে নীরবতা অবলম্বন করলো এ মাঠটি রক্ষার জন্যে চাঁদপুর কণ্ঠে বার বার লিখালিখি করা ছাড়া সচেতন কাউকে কিছুই করতে দেখা গেলো না। ফলে মাঠটি চাঁদপুর শহরের পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের মাঝে পুরানো স্মৃতি হিসেবেই থেকে গেলো, বাস্তবে আর নয়। চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র তাঁর শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত এ মাঠটি পুনরুদ্ধারের আগ্রহ প্রকাশ করলেও এখনও এ সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা যায়নি।
ফরিদগঞ্জে একটি ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ বিলীন হবার পথে। এটির অবস্থান কড়ৈতলী গ্রামে বাবুর দিঘির পাশে। ইতোমধ্যে এ মাঠের ২০-২৫ ফুট জায়গা দিঘিতে বিলীন হয়ে গেছে। উপর্যুপরি যানবাহন চলাচল করে অর্থাৎ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে মাঠটির বারোটা বাজানো হয়েছে। ইতিপূর্বে এই খেলার মাঠে ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করতে চাইলে এলাকাবাসী দু শতক জমি কিনে দিয়ে খেলার মাঠ রক্ষা করেন। অথচ এই অফিসের সীমানা দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে মাঠের জায়গা দখল করেই। এতে মাঠটি সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। তার ওপর মাঠটির পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ চলছে। এমতাবস্থায় বিক্ষুব্ধ খেলোয়াড় ও ক্রীড়ামোদী লোকজন গত ১৬ অক্টোবর রোববার এলাকার শত শত লোক নিয়ে মানববন্ধন করেছে। তাদের দাবি, মাঠ রক্ষার স্বার্থে দিঘিতে বিলীন হওয়া মাঠের অংশ ভরাট করে তাতে রাস্তা নির্মাণ করা হোক। একই সাথে মাঠটি খেলার উপযোগী করে দেয়া হোক।
এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড় রেজাউল করিম রেজা বলেছেন, আমি কড়ৈতলীর এ মাঠে খেলেই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছি। মাঠটির চরম দুরাবস্থায় গত এক মাসে একটি খেলাও হয় নি। আমরা এ মাঠটি রক্ষা ও সংস্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আমরা কড়ৈতলীর এ মাঠটি রক্ষার দাবিতে একাত্মতা পোষণ করছি। এ দাবি পূরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করছি।