প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেলার প্রতিটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র সুষ্ঠুভাবে চলে-এমনটি হলফ করে বলার সুযোগ নেই। তবে কিছু উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুব ভালোভাবে চলে-এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। এমন একটি হচ্ছে রূপসা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ শীর্ষ সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে, যার শিরোনাম হয়েছে ‘স্বাস্থ্যসেবায় ঘাটতি না থাকলেও রূপসা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জনবল সঙ্কট চরমে ॥ ২৭ শতাংশ জমি বেদখল ॥ পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন’।
এ সংবাদে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন ৬,৭,৮, ১৫ ও ১৬ নং ইউনিয়নের অর্থাৎ পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজন তাদের নিত্যদিনের স্বাস্থ্যসেবার জন্যে রূপসা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। এখানে কর্মরত চিকিৎসক (উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) ডঃ লুৎফুর রহমান প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৬৫ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করেন। জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি জানান, রোগীর সংখ্যানুপাতে ঔষধ সরবরাহ কম। এখানে জনবল সঙ্কট চরমে। নেই ফার্মাসিস্ট, নাইট গার্ড, দারোয়ান ও আয়া। হাসপাতাল ভবন রং করা এবং দরজা ও জানালা মেরামত করা জরুরি।
শুধু ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও চাঁদপুর জেলা নয়, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার প্রসিদ্ধ রূপসার জমিদার বংশের লোকজন রূপসা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্যে ৮০ শতাংশ জমি দান করেন। পাশর্^বর্তী হাই স্কুল কর্তৃপক্ষসহ অন্যরা চারপাশ দিয়ে দখল করতে করতে এ দানকৃত জমির ২৭ শতাংশই দখল করে ফেলে। বিএস ফাইনালে ৭০ শতাংশ জমি খতিয়ানভুক্ত হলেও বাস্তবে দখলে আছে ৫৩ শতাংশ। এ জায়গাতেও দখলদারিত্ব কায়েম করতে ভূমিদস্যুদের পাঁয়তারা অব্যাহত আছে। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চারপাশে নিকটবর্তী হাই স্কুল ও রূপসা বাজারের ময়লা ফেলে ভাগাড় বানিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে ময়লার দুর্গন্ধে হাসপাতালের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে।
জানা যায়, রূপসা আহাম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় তাদের জমি দাবি করে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির পূর্ব পাশে জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে এবং আরো জমি দখল করে আরেকটি মার্কেট নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। ইতিপূর্বে এ স্কুল কর্তৃপক্ষ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গোপনে মামলা করে কোনো নোটিস না করে মামলায় একতরফা রায় নিয়ে নেয়। পরে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষে আপিল করা হলে আদালত ওই রায় বাতিল করে মামলা চলমান করে দেয়।
একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্যে ৮০ শতাংশ জমি অনেক বেশিই বটে। জনবল সঙ্কটহেতু এ জমি রক্ষণাবেক্ষণ কষ্টকরই হয়ে দাঁড়ায়। যেমনটি রূপসা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে লক্ষণীয়। আশা করি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি রক্ষা, জনবল সঙ্কট নিরসন, ঔষধ সরবরাহ বৃদ্ধি ও ভবন সংস্কারে অতি সত্বর কার্যকর উদ্যোগ নেবে। সর্বোপরি বিশেষ নজর দিয়ে এটিকে মডেল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।