প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেলার হাতে গোণা যে ক’টি বহুল পরিচিত প্রসিদ্ধ বাজার রয়েছে, তার মধ্যে মতলব উপজেলাধীন নারায়ণপুর অন্যতম। হাজীগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এবং মতলব উত্তর উপজেলার কাছাকাছি হওয়ায় এ বাজারটি চারটি উপজেলার বাসিন্দাদের আনাগোনায় থাকে সর্বদা জমজমাট। সড়ক ও নৌযোগাযোগে সমৃদ্ধ হওয়ায় এবং রাজধানী ঢাকায় আসা কিংবা যাওয়ায় সর্বনিম্ন দেড় ঘন্টা সময় ব্যয় হওয়ায় এ বাজারটির গুরুত্ব চাঁদপুর জেলার উপজেলা সদরস্থ কিছু বাজারের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই এই বাজারকেন্দ্রিক নারায়ণপুর পৌরসভা হয়েছে, যেটির কার্যক্রম শুরু হয়ে বন্ধ হয়েছে, আইনি জটিলতা মোকাবেলা করে আবার চালুর বিষয়টি অপেক্ষমান আছে।
সুন্দর ভৌগোলিক অবস্থার কারণে নারায়ণপুর বাজারে ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক কিছুই আছে। বাজারে ও বাজার সংলগ্ন স্থানে দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কিন্ডারগার্টেন ও একটি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। আর সামান্য দূরত্বে রয়েছে দুটি ফাজিল মাদ্রাসা, একাধিক কওমী মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেন। কিন্তু নারায়ণপুর বাজারের অভ্যন্তরীণ সব রাস্তাই ক্ষতবিক্ষত। সামান্য বৃষ্টিতেই যানবাহন দূরে থাক, জনচলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় রাস্তাগুলো। যানবাহন-পথচারী-শিক্ষার্থী সকলেই চরম ভোগান্তিতে পড়েন বৃষ্টির সময়টাতে। রাস্তাগুলোতে পিচ নষ্ট হওয়ায় ইট-পাথরের কণা ভেসে উঠেছে। ছোট-বড় গর্তে জমে থাকা বৃষ্টির পানির সাথে কাদামাটি মিশ্রিত হয়ে নষ্ট করে দেয় পথচারীসহ অন্য সকলের জামা-কাপড়। এমন দুরবস্থার কারণে প্রসিদ্ধ এ বাজারটির প্রতি ক্রমশ ক্রেতারা অনাগ্রহী হয়ে উঠেছে, যেটি মারাত্মক ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে বলে ব্যবসায়ী ও পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা।
নারায়ণপুর বাজারে ব্যবসায় বিপুল পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা এ বাজারের রাস্তাগুলোর দুরবস্থায় ভীষণ উদ্বিগ্ন। ব্যবসায়ীরা বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ক্রেতা সাধারণ বাজারের একটি সুন্দর পরিবেশ প্রত্যাশা করে। যদি তারা তা না পায় তাহলে এই বাজারের প্রতি ক্রেতারা আগ্রহ হারাবে। বিশেষ করে বাজারের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ মূল রাস্তা এবং শাখা রাস্তাগুলোর সংস্কার করা একান্ত প্রয়োজন। একই সাথে পরিকল্পিত এমন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা প্রয়োজন, যাতে বাজারের বৃষ্টির পানিসহ অন্যান্য পানি বাজার সংলগ্ন বোয়ালজুড়ি খাল ও ছোট খালে খুব সহজে নিষ্কাশন সম্ভব হয়।
চাঁদপুর কণ্ঠের নারায়ণপুর প্রতিনিধি ও নারায়ণপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ নারায়ণপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ সফিকুল ইসলাম স্বপন মজুমদারের সাথে আলাপ করে জানান, বাজারটির উন্নয়নে কোনো বরাদ্দ নেই। তবে বাজারটির যে অংশ যে ইউনিয়নের আওতায়, সে অংশের উন্নয়ন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে হবে। আমরা মনে করি, নারায়ণপুর বাজারের দুরবস্থা নিরসনে ইউনিয়ন পরিষদের স্বল্প বরাদ্দে প্রত্যাশা পূরণ হবে না, এজন্যে প্রয়োজন বড় ধরনের বিশেষ বরাদ্দ। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের সুদৃষ্টি ও বিশেষ উদ্যোগের অনিবার্যতা অস্বীকার করা যায় না। তবে পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হলে এখানে শুধু রাস্তাঘাট নয়, নাগরিক সুবিধাদি বৃদ্ধির জন্যে নানা অবকাঠামো তৈরি হবে। কিন্তু সে কার্যক্রম শুরুতে জটিলতা বা প্রতিবন্ধকতা কোথায় এবং এ ব্যাপারে করণীয় সম্পাদনের জন্যে স্থানীয় এমপির আন্তরিক ভূমিকা এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগ গ্রহণের আবশ্যকতা রয়েছে।