শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

এবার দেখবো তিনি সেখানেও যান কিনা-
অনলাইন ডেস্ক

‘চাঁদপুরের ইলিশ’ মানেই অনন্য ব্র্যান্ড। চাঁদপুরে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যারই পোস্টিং হয়েছে, তার কাছে তার আত্মীয়স্বজনের আবদার : চাঁদপুরের ইলিশ পাঠাও/পাঠান। কিন্তু চাঁদপুরে বদলি হয়ে আসার পর তারা দেখেন যে, এখানকার মেঘনা-পদ্মায় ইলিশ ধরা পড়ে না বললেই চলে। যাও ধরা পড়ে, সেটা ইলিশ-পাগল সামর্থ্যবান ক্রেতা দুর্মূল্য সত্ত্বেও মাছ ঘাট থেকেই কিনে নিয়ে যান। চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটে অর্থাৎ দেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রসিদ্ধ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চাঁদপুরের ইলিশকে বলা হয় লোকাল ইলিশ। এই ইলিশের ব্যাপক চাহিদা দেখে উক্ত মাছ ঘাটের কিছু ব্যবসায়ী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে চলছেন। তারা অনভিজ্ঞ ক্রেতার কাছে সরাসরি ও অনলাইনে চাঁদপুর ব্যতীত অন্য জায়গার ইলিশকে লোকাল ইলিশ বলে বিক্রি করে অবৈধ মুনাফা লুটছেন।

বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত এক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, তিনি চাকুরিতে থাকাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কর্মরত এক দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে দিয়ে চাঁদপুর মাছঘাট থেকে ভালো পরিমাণ চাঁদপুরের ইলিশ কিনে নিয়ে যান। বাসায় রান্নার পর দেখেন, ইলিশে স্বাদ নেই। তিনি বলেন, ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে চাঁদপুরের চেয়ে কম দামে ইলিশ কিনে যে স্বাদ পাই, চাঁদপুর থেকে উচ্চমূল্যে কেনা ইলিশে সেই স্বাদও পেলাম না।

চাঁদপুরেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা এবং ব্যবসা করে সুপ্রতিষ্ঠিত এক ব্যবসায়ী বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। সকালে বের হন প্রাতঃভ্রমণে। এ সময় অন্য যাদের সাথে দেখা হয়, তাদের কেউ যখন জানতে পারেন তিনি চাঁদপুরের, তখনই তার কাছে আবদার আসে : ভাই! আপনি চাঁদপুর গেলে ইলিশ নিয়ে আসবেন। তিনি সেই আবদার রক্ষা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। বেশি দাম দিয়ে কিনে কষ্ট করে ঢাকায় নিয়ে প্রাতঃভ্রমণসঙ্গীকে ইলিশ উপহার দিলেন। পরদিন সেই সঙ্গী দেখা হওয়া মাত্র বললেন, আরে ভাই! চাঁদপুরের দামী ইলিশেও দেখি স্বাদ নেই। তিনি দুঃখ করে চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, প্রতারিত হবার পর আমি কারওয়ান বাজার থেকে কম দামে ইলিশ কিনে সেই সঙ্গীকে চাঁদপুরের বলেই চালিয়ে দিয়েছি। তিনি পরদিন বললেন, ভাই! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এবার সত্যিকারের চাঁদপুরের ইলিশ খাইয়েছেন।

চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বর্তমান কর্মকর্তা নূর হোসেন গত ২৮ আগস্ট একটি আনকমন বা অসাধারণ অভিযান চালিয়েছেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। তিনি এখানকার ন্যায্যমূল্যে(!)র ঔষধের দোকান দত্ত ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পেয়ে ১৫ হাজার টাকা এবং রোগীদের খাবার পরিবেশনকারী ক্যান্টিনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না, নিম্নমানের ও পরিমাণে কম খাবার বিতরণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। নিঃসন্দেহে তার এ অভিযানটি সময়োপযোগী, সাহসিক ও যথাযথ হওয়ায় তিনি প্রশংসায় ভাসছেন। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হাসপাতালে এই ঔষধ ব্যবসা ও খাবার বিতরণের কাজ চলে আসছে, যাদের কাছে কর্তৃপক্ষ রীতিমত অসহায়। হাসপাতালের অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হলেও কর্তৃপক্ষ এ দুটি ব্যবসায় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি অদৃশ্য শক্তির জোর প্রভাবের কারণে।

চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে কিছু ব্যবসায়ীর ‘চাঁদপুরের ইলিশ’ বিক্রি নিয়ে চলমান প্রতারণার বিরুদ্ধেও ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আভিযানিক তৎপরতা অতীব জরুরি। আমরা ইতিপূর্বে এ সম্পাদকীয় নিবন্ধে এমন তৎপরতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছিলাম। উক্ত অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেনের এ বিষয়টি হয়তো চোখে পড়েনি কিংবা দেখেও তিনি না দেখার ভান করতে পারেন। যেটিই হোক, সাহসী ও সক্রিয় কর্মকর্তা নূর হোসেন চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে অবশ্যই অভিযান চালাবেন, ক্রেতাদের সাথে কিছু ব্যবসায়ীর প্রতারণার বিয়ষটি পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন-এমন প্রত্যাশা প্রতারণার শিকার প্রতিটি ক্রেতার। আমাদের এখন দেখার অপেক্ষা, তিনি বড় স্টেশন মাছঘাটে যান কিনা এবং কার্যকর অভিযান পরিচালনা করেন কিনা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়