শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

দেরিতে হলেও অনেক মহৎ কাজ!
অনলাইন ডেস্ক

২০১৪ সালের ৩০ মার্চ মারা গেছেন চাঁদপুরের অন্যতম সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব কামরুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ছিলেন চাঁদপুর কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক, কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের স্পোর্টস্ অফিসার, কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ২৫ বছরব্যাপী সময়ের সভাপতি, চাঁদপুর ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, টিআইবির সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুর-এর সভাপতি, চাঁদপুরের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদয়ন শিশু বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের আজীবন সদস্য।

২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট মারা যান চাঁদপুরের কিংবদন্তীতুল্য সমাজসেবক ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব ডাঃ এম এ গফুর। তিনি ছিলেন চাঁদপুর মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও পরবর্তীতে সভাপতি, রেড ক্রিসেন্ট চাঁদপুর ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বিএমএ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি, সনাকের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যসহ আরো বহু প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক ইত্যাদি। তিনি ও তাঁর স্ত্রী প্রফেসর মাহমুদা খাতুন চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের ছয়তলাবিশিষ্ট নূতন ভবন নির্মাণের জন্যে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ত্রিশ শতাংশের অধিক জায়গা দান করে বিরাট বদান্যতা ও ঔদার্যের পরিচয় দেন।

২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে মারা যান ডাঃ মোঃ একিউ রুহুল আমিন। জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি ছিলেন বাংলাদেশে মডেল হিসেবে স্বীকৃত কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর-১ অঞ্চলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির দু মেয়াদের সভাপতি, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি ও রোটারী ভবন নির্মাণের উদ্যোক্তা, চাঁদপুর জেলা বিএমএ'র সভাপতি, সনাকের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সহ কিছু সংগঠনের আজীবন সদস্য, কর্ণধার ও উপদেষ্টা। একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে তাঁর ছিলো ব্যাপক পরিচিতি।

প্রফেসর মনোহর আলী মারা যান ২০২০ সালের ১৮ মে। তিনি ছিলেন চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, যিনি এ কলেজটিকে ডুবন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করার দক্ষতা প্রদর্শনকারী, সনাকের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ও চাঁদপুরে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখা ও চাঁদপুর পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্যসহ বহু সংগঠনের উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট লেখক।

প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন আকস্মিকভাবে মারা যান ২০২০ সালের ১৬ জুন। তিনি ছিলেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স ইনস্টিটিউট চাঁদপুর জেলা শাখা, জাতীয় সাহিত্য পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখা, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব, চাঁদপুরস্থ হাজীগঞ্জ সমিতি ও চাঁদপুর মুক্তিফৌজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সেক্রেটারী সহ বহু সংগঠনের আজীবন সদস্য, উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক, বিদগ্ধ লেখক, চাঁদপুর সেন্ট্রাল ইনার হুইল ক্লাব ও মতলব রোটারী ক্লাব প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা, দেশের মানুষকে আর্সেনিকমুক্ত পানি পান আন্দোলনের নিবেদিত উদ্যোক্তা।

চাঁদপুরের এই পাঁচ গুণী ব্যক্তি দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ছিলেন অনেক প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। এখানকার সমাজ উন্নয়নে এঁদের অবদান অসামান্য ও অবিস্মরণীয়। এঁদের মৃত্যুতে বড় ধরনের শোকসভা কিংবা নাগরিক শোকসভা আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা ছিলো। কিন্তু নানা কারণে সেটি হয়নি। অবশেষে বিলম্বে হলেও সনাক, চাঁদপুরের পক্ষ থেকে গত ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে নিজস্ব কার্যালয়ে সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা হয় স্মরণ সভা। শোকাহত পরিবারের সদস্য, শহরের সুধীজন সহ বিভিন্ন স্তরের লোকজনের উপস্থিতিতে যে ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদায় সভাটি করা হয়েছে, তাতে মরহুমদের জীবনী উপস্থাপন সহ যেভাবে তাঁদেরকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হয়েছে, সে বিবেচনায় সভাটিকে মহৎ উদ্যোগ বললে কমে হয়ে যায়, চাঁদপুরের স্মরণকালের ইতিহাসে অন্যতম ব্যতিক্রম আয়োজন বলা যায় নির্দ্বিধায়। এতে অত্যুক্তি হবার অবকাশ নেই বলে মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়