সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

এমন জরিমানা হোক লাগাতার
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশের বিভিন্ন শহরের রাস্তাগুলো প্রশস্ত খুব কমই হয়ে থাকে, বরং অপ্রশস্তই বেশি হয়ে থাকে। বড় বড় শহরে রাস্তার পাশে ফুটপাত থাকলেও বাজার/শপিংমল সংলগ্ন জনাকীর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ফুটপাতগুলো বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রেতা তথা হকারদের দখলে থাকে। শহরের রাস্তা যতোই প্রশস্ত-অপ্রশস্ত হোক না কেনো, ফুটপাত না থাকলে ব্যাপক জনসমাগম হয় এমন স্থানে রাস্তার দুপাশ ভ্রাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতা/হকারদের দখলে থাকে। কারণ, পথচারী কিংবা বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের অধিকাংশই কষ্ট এড়াতে সাধারণত এদের ক্রেতা হয় এবং সে সুবাদে তারা লাভবান হয়। শহরের রাস্তার পাশের এই দখলদারিত্ব ঠেকাতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার কর্তাব্যক্তিদের দায়িত্ব-কর্তব্য থাকলেও তারা অর্থপূর্ণ কারণে নীরবতা পালন করেন। এই কারণের দুটি দিক আছে। একটি দিক হচ্ছে ফুটপাত/রাস্তার পাশের দখলদারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী। এরা উক্ত কর্তাব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে। আরেকটি দিক হচ্ছে কেবলই প্রধানত অর্থনির্ভর। এ অর্থের ভাগ পায় সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা কিংবা অন্য সংস্থার কর্তাব্যক্তিগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাস্তান।

ফুটপাত/রাস্তার পাশ থেকে হকার উচ্ছেদ কার্যক্রম কম-বেশি সব শহরেই দেখা যায়। সেজন্যে হকাররা ভ্যান গাড়ি কিংবা চাকা বিশিষ্ট দোকান, এমনকি পিকআপযোগে ফুটপাত/রাস্তার পাশে বেচাকেনা করে। এটা নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করার ক্ষমতা ট্রাফিক পুলিশে থাকলেও তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নীরবতা পালন করে নানা কারণে। এমনকি যত্রতত্র বিভিন্ন যানবাহনের পার্কিং, যাত্রী ওঠানামাও ট্রাফিক পুলিশ প্রায়শই সহ্য করে অনুরূপ কারণে। সেজন্যে তারা মুখরোচক অভিযোগের শিকার হয় কম-বেশি।

ফুটপাত/রাস্তার পাশে অবৈধ দখলদারিত্ব যানজটের সবচে’ বেশি উল্লেখযোগ্য কারণ। এছাড়া আরো কিছু কারণ রয়েছে। এ কারণগুলো যখন কোনোভাবেই তিরোহিত বা নিরসন না হয়, তখন ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতাসম্পন্ন কর্তাব্যক্তি (ইউএনও, এসি-ল্যান্ড, সহকারী কমিশনার) পুলিশ ফোর্স নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন এবং জরিমানা করেন। যেমনটি বুধবার চাঁদপুর জেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র হাজীগঞ্জ বাজারে পরিচালনা করে ৩২ ব্যবসায়ীকে সাড়ে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশে অবস্থিত উক্ত বাজারের প্রধান সমস্যা যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মোঃ রাশেদুল ইসলাম এবং এসি-ল্যান্ড মোঃ মেহেদী হাসান মানিক জানিয়েছেন। তাঁরা জনস্বার্থে এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন।

বাস্তবতা হলো এই যে, আমাদের দেশে ফুটপাত/রাস্তার পাশের ব্যবসায়ী তথা হকাররা কালেভদ্রে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা দেয়াটাকে খুব ভয় পায় না। সেজন্যে এমন আদালতের ধারাবাহিকতা এবং লাগাতার জরিমানার বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। উচ্ছেদ অভিযানের নির্মমতার বিপরীতে জরিমানা তথা লঘুদণ্ডে যদি হকারদের আইনমান্যতায় অভ্যস্ত করা যায় এবং এদেরকে পুনর্বাসন করা যায়, সর্বোপরি ক্রেতারা যদি রাস্তার পাশ দখলদারী হকারদের নিকট থেকে কেনাকাটায় নিবৃত্ত হয়, তাহলে প্রশস্ত-অপ্রশস্ত সব ধরনের রাস্তাতেই যানজট হ্রাস করানো সম্ভব বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়