প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেলা দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সন্নিহিত কিছু জেলা এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক ও নৌপথে যাতায়াতের বহু রুট রয়েছে। দেশের পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা সমূহ থেকে চাঁদপুর জেলায় জালের ন্যায় বিদ্যমান প্রশস্ত-অপ্রশস্ত সড়ক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অপরাধী চক্রের নৌপথের নাগাল পাওয়া কষ্টকর হলেও অসম্ভব নয়। সেজন্যে মাদক পাচারকারীরা চাঁদপুরকে রেখেছে তাদের অনেক বেশি পছন্দের তালিকায়। কুমিল্লা জেলা সংলগ্ন ভারতীয় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে গাঁজা ও ফেন্সিডিলের বিরাট চালান নিয়ে জাতীয় মহাসড়ক ও রেলপথ দিয়ে যানবাহনযোগে সেগুলো পাচার কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। সেজন্যে বিকল্প হিসেবে নানাভাবে চাঁদপুর জেলাকে মাদক পাচারে ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে কমণ্ডবেশি নিরাপদ ভাবে পাচারকারীরা। এ বিষয়টি নজরে এসেছে কিংবা অবহিতির আওতায় এসেছে পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আরো কিছু সংস্থার। সেজন্যে আভিযানিক তৎপরতায় তাদের কাটছে ব্যস্ত সময়।
কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরগামী বোগদাদ, রিল্যাক্সসহ বিভিন্ন বাস, সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনে এবং বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালে প্রায় প্রতিদিন মিলছে কেজির পর কেজি গাঁজা, শত শত ফেনসিডিল কিংবা অন্য কোনো মাদক। নদীতে মাছ থাকলে জেলেরা জাল ফেললেই যেমন পায় মাছ, তেমনি চাঁদপুর জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার গোয়েন্দা জাল বিস্তার করলেই পাওয়া যায় মাদক। এজন্যে চাঁদপুর জেলার প্রতিটি সচেতন মানুষ বিব্রত, তারা ভোগে অস্বস্তিতে। প্রথমে মাদক পাচারকারীরা পুরুষ হলেও এখন বোরকা পরিহিত নারীরাও হয়েছে। ভবিষ্যতে শিশু-কিশোরও যে হবে না-সেটা হলফ করে বলা যায় না। দেশের বিভিন্নস্থানে মাদক বহনের বহুবিধ/চমকপ্রদ কৌশল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যবেক্ষণ করলেও চাঁদপুরে সাধারণ কৌশল বা দৃশ্যই এতোদিন দেখা গেছে। এ বাহিনীর তৎপরতায় তাদের চোখ ফাঁকি দিতে মাদক পাচারকারীরা অতি সম্প্রতি অসাধারণ কৌশল অবলম্বন শুরু করেছে। সেজন্যে এখন বালিশের ভেতর পাওয়া যাচ্ছে গাঁজা, আর পেটের ভেতর পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। এটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি অস্বস্তিদায়ক।
হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ রোববার দিবাগত রাতে দুটি অভিযান চালিয়ে ৪ জন যথাক্রমে টেকনাফের বাসিন্দা লাইয়াং মং ওরফে জিতু চাকমা (২২) ও হাজীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ সোহেল হোসেন (২৭)কে পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ডস্থ টোরাগড় গ্রামের উত্তরপাড়া হোসেন উদ্দিন হাজী বাড়ি (পাথরকিল্লা বাড়ি) থেকে, বিকেলে কামরুল ইসলাম (৩২)কে ৪নং ওয়ার্ডস্থ মকিমাবাদ গ্রামের আতুরিয়া মাদ্রাসার উত্তর-পূর্ব পাশে কাজী বাড়ি সংলগ্ন তার বসতঘরের সম্মুখ থেকে ও কুমিল্লার বাসিন্দা শামীম ভূঁইয়াকে একই স্থান থেকে সর্বমোট ২২৫০ পিচ ইয়াবা ও নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ আটক করে। আটককৃত ৪ জনের মধ্যে জিতু চাকমার পেটে থাকা ইয়াবাগুলো তাকে হাসপাতালে নিয়ে তার পায়ুপথ দিয়ে বের করে আনার ব্যবস্থা করে পুলিশ। নিঃসন্দেহে হাজীগঞ্জ থানার এ দুটি মাদক বিরোধী অভিযান অনেক সফল অভিযান। আমরা এ থানার মতো অন্য সকল থানাকেও এমন সফল অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।