প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২২, ০০:০০
একটি গানের কথা হচ্ছে এমন-‘নামের বড়াই করো নাকো নাম দিয়ে কী হয়/নামের মাঝে পাবে নাকো সবার পরিচয়।’ গানের এই কথানুযায়ী নামের মাঝে সবার পরিচয় খুঁজে না পেলেও সুন্দর, শ্রুতিমধুর ও অর্থবহ নামের জন্যে অনেকে কম-বেশি বড়াই করে। চাঁদপুরে এমন ক’টি নাম হচ্ছে : ইব্রাহিমপুর, রাজরাজেশ্বর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, শাহপুর, বিষ্ণুপুর, শাহমাহমুদপুর, মহামায়া, ইসলামপুর, রামচন্দ্রপুর, কালীপুর, জগতপুর, মেহের, হরিসভা, বাবুরহাট, কল্যাণপুর ইত্যাদি। এর মধ্যে সর্বশেষ নামটি হচ্ছে কল্যাণপুর। এটি চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন একটি ইউনিয়নের নাম। এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে কিছু বিখ্যাত ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থেকে তাঁদের নানামুখী কল্যাণধর্মী কর্মকাণ্ডে এ ইউনিয়নটিকে সুপরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তখন বার বার মনে হয়েছে, এ ইউনিয়নটি আসলেই কল্যাণে ভরপুর একটি ইউনিয়ন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই কল্যাণপুর ইউনিয়নের নামটি নানা অকল্যাণ ও বদনামের সাথে বার বার উচ্চারিত হচ্ছে বিধায় ইউনিয়নবাসী যেমন বিব্রতবোধ করছে, সচেতন মানুষও নানা প্রশ্ন তুলছে। সবার একই কথা, কল্যাণপুরে থাকবে কেনো অকল্যাণ? অকল্যাণ, দুর্ণাম, অনিয়ম পুরোপুরি দূর করা সম্ভব না হলেও অন্তত কমানোর কি কোনো উপায় নেই? কেউ কি এ ব্যাপারে উদ্যোক্তা হতে পারে না।?
গত শুক্রবার চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় ‘কল্যাণপুরে জেলেরা এখনো চাল পায়নি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ সংবাদ থেকে জানা যায়, মার্চ-এপ্রিল দু মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে জাটকা সংরক্ষণ মৌসুমে অভয়াশ্রমে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে সরকার নিবন্ধিত প্রতি জেলের জন্যে মাসিক ৪০ কেজি করে চার মাস চাল বরাদ্দ দেয়। যা নদী তীরবর্তী ও নিকটবর্তী ইউনিয়নগুলোর জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। অভয়াশ্রমের সময় অতিক্রান্ত হয়ে প্রায় দু মাস চলে গেলেও কল্যাণপুর ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলেরা এখনো এক মাসের চাল পায়নি। গত ১৮ মে কল্যাণপুরের জেলেদের মাঝে চাল বিতরণের কথা থাকলেও সেটি সম্পন্ন হয় নি। কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটওয়ারীর ৪ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগের কারণে তাৎক্ষণিক জেলেদের মাঝে চাল বিতরণের কার্যক্রম বন্ধ করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এরপর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ইউএনও’র নির্দেশে কল্যাণপুরের দুটি গুদাম পুলিশের উপস্থিতিতে সিলগালা করে দেন। এ ব্যাপারে মামলাও হয়। ইতোমধ্যে এক মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হবার পরও আইনি জটিলতার কারণে এখনো জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, কল্যাণপুরের জেলেদের মাঝে উক্ত চাল বিতরণের জন্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) আদালতে আবেদন করেছে। এ আবেদন মঞ্জুর হলেই চাল বিতরণ সম্ভব হবে। চাল না পেয়ে অসন্তুষ্ট জেলেদের অনেকে বলেছেন, চেয়ারম্যান চাল বিক্রি করে থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু আমাদের জেলেদের চাল বিতরণ বন্ধ থাকবে কেন? এ ব্যাপারে জেলেরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। আমাদেরও অনুরূপ কামনা।