বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২২, ০০:০০

পরকালেও মর্যাদাবান থাকুন তিনি-
অনলাইন ডেস্ক

হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রবীণ রাজনীতিবিদরা একের পর এক চলে যাচ্ছেন। তাঁদের চিরবিদায়ে অভিভাবকশূন্যতার উপলব্ধিতে অনেকেই কষ্টে ভুগছেন। সাবেক এমপি ডাঃ এম.এ. সাত্তার, আব্দুর রব ও এম.এ. মতিন এবং হাজীগঞ্জ পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাফাজ্জল হায়দার নসু চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁদের অনুপস্থিতিতে যে ক’জন বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদকে হাজীগঞ্জ উপজেলার লোকজন অভিভাবকতুল্য মনে করতেন, তাঁদের অন্যতম অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার। তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভায় দুবার এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে দুবার চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করে জনপ্রতিনিধি হিসেবে উপজেলাবাসীর কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয় করতে পেরেছিলেন। এছাড়া হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

জনাব আব্দুর রশিদ মজুমদার ২-৪ বছর কোনো কলেজে অধ্যাপনা করেই নিজের নামের আগে অধ্যাপক যোগ করেন নি। তিনি দু দশকেরও অধিক সময় ধরে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং জনপ্রতিনিধি হবার পরও অধ্যাপনা ছাড়েন নি। তিনি কলেজে গিয়ে নির্ধারিত ক্লাসগুলো নিয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে এতোটাই আন্তরিকতার সাথে দায়িত্বপালন করেন যে, যার ফলস্বরূপ তাঁকে পৌরবাসী পুনর্নির্বাচিতও করেছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়েই তাঁকে শিক্ষকতা ছাড়তে হয়েছে। একজন প্রথিতযশা শিক্ষক হিসেবে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন সমাদৃত ও শ্রদ্ধেয়। ‘রশিদ স্যার’ হিসেবে তিনি শুধু শিক্ষার্থীদের কাছে নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও সুপরিচিত ছিলেন।

রাজনীতি, শিক্ষকতা ও জনপ্রতিনিত্বের বাইরে বহুবিধ সামাজিক কাজের সাথে ছিলো অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদারের ব্যাপক সংশ্লিষ্টতা। সালিস-দরবারেও তাঁর কাটতো ব্যস্ত সময়। প্রথমে ছেলে এবং পরবর্তীতে স্ত্রীর অকাল মৃত্যুতে তিনি মুষঢ়ে পড়েন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্রমশ নানাবিধ অসুস্থতা তাঁকে গ্রাস করে ফেলে। এক পর্যায়ে কিডনিজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হন এবং এর পরিণামে দীর্ঘ কষ্ট ভোগের পর তিনি গত সোমবার (১৬ মে ২০২২) দিবাগত রাত পৌনে একটায় হাজীগঞ্জ বাজারের সন্নিকটস্থ মকিমাবাদ গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭০ বছর। তিনি এক ছেলেসহ বহু আত্মীয়স্বজন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদে পুরো হাজীগঞ্জ জুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।

হাজীগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার ছিলেন আইকন। তাঁর অসুস্থতাকালীন তাঁর শয্যাপাশে গিয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র আ.স.ম. মাহবুব-উল-আলম লিপনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ যেভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন, তাতেই সেটি প্রমাণিত হয়। তিনি জীবন সায়াহ্নে এমপি হিসেবে মনোনয়ন চেয়ে না পেলেও বর্তমান এমপি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম থেকে পেয়েছেন আশাব্যঞ্জক সম্মান। মৃত্যুর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে না থাকলেও দলীয় যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁর পরামর্শ ও প্রভাব ছিলো অনেক বিবেচ্য। এটাও কম কিসে! তিনি পরকালে তাঁর সকল ভালো কাজ বিবেচনায় দুনিয়ার চেয়েও বেশি মর্যাদাবান থাকুন, জান্নাতবাসী হোন-মহান আল্লাহর দরবারে আমরা সে প্রার্থনাই করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়