বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

অকালে হারিয়ে গেলেন তিনি
অনলাইন ডেস্ক

চিরতরে একে একে হারিয়ে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তিনি নাম লেখালেন অকালে এবং অসময়ে। তাঁর নাম মাহবুবুল আলম চুন্নু। এমন নামে হাজীগঞ্জে এমনকি পুরো চাঁদপুর জেলায় বহুল পরিচিত দ্বিতীয় নাম আর নেই। হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা ইছাপুর থেকে মেধার গুণে ওঠে আসা এই মানুষটি চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত হন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। লেখাপড়া শেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে যোগদান করেন এবং একজন কর্মকর্তা হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন।

‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের যে ১৬ ডিসেম্বর তারিখে অভ্যুদয় ঘটে, তার পঞ্চাশ বছর পূর্তির দিন (১৬ ডিসেম্বর ২০২১) মাহবুবুল আলম চুন্নু অনেকটা আকস্মিকভাবে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো মাত্র ৬৫ বছর। তাঁর অসংখ্য ভক্ত ও গুণমুগ্ধদের শোক সাগরে ভাসিয়ে তিনি পরপারে পাড়ি জমান। এবারের ১৬ ডিসেম্বরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শেষদিনে সমগ্র জাতি যখন আনন্দে আত্মহারা এবং নানান কর্মসূচিতে ছিলো মশগুল, ওইদিন বাদ জোহর হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর প্রতি জানানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। তারপর ওইখানে প্রথম জানাজা ও বাদ আসর ইছাপুর গ্রামে তাঁর দ্বিতীয় জানাজাশেষে পারিবারিক গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

মাহবুবুল আলম চুন্নু নব্বইর দশকে চাঁদপুর শহরে তাঁর পেশাগত জীবন অতিবাহিত করার সময় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিটি কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাথে বহু কাজ করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি উদীচী জেলা সংসদের সহ-সভাপতির দায়িত্বপালন করেন। ১৯৯৯ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে চাঁদপুর কণ্ঠ যখন চাঁদপুরের প্রথম দৈনিক হিসেবে ধারাবাহিক প্রকাশনা শুরু করে, তখন চাঁদপুর কণ্ঠ পাঠক ফোরাম গঠনে তিনি প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন এবং সমকালীন বিষয়ে লেখালেখি করেন। তিনি হাজীগঞ্জে বদলি হয়ে গিয়ে সেখানে হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় উদ্যোগ নেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাফল্যের সাথে দায়িত্বপালন করেন। তিনি হাজীগঞ্জে গড়ে তোলেন হাজীগঞ্জ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ নামে একটি সংগঠন এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। উপজেলা পর্যায়ে নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে এ সংগঠনটিকে গতিশীল রাখার জন্যে তিনি যারপরনাই প্রয়াস চালান। তিনি মতলব দক্ষিণ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা নারায়ণপুরে বদলি হয়ে গিয়ে সেখানে এমন একটি প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন, যেটি চাঁদপুর জেলার উপজেলা সদরের বাইরে টেকসই প্রেসক্লাব হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

মাহবুবুল আলম চুন্নুর বড় পরিচয় হচ্ছে, তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ সংগঠক এবং বক্তব্য ও লেখায় উচিত কথা সাবলীলভাবে উপস্থাপনে পারঙ্গম একজন ব্যক্তি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর স্পষ্ট ভাষণ ও প্রতিবাদী চরিত্র ছিলো উল্লেখযোগ্য। তাঁর অকাল মৃত্যুতে ভক্তকুলের মধ্যে অনেকের হৃদয়ে হয়েছে রক্তকরণ। একজন ভালো মানুষকে হারিয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলাবাসী সত্যিই ভীষণ শোকাহত। আমরা তাঁর মৃত্যুতে চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি, তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়