বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

এতোটা শান্তিপূর্ণ সম্মেলন বিরল!
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক যে কোনো সংগঠনের বার্ষিক, দ্বি-বার্ষিকসহ যে কোনো সম্মেলন নিয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা বিদ্যমান। মনোমালিন্য, হাতাহাতি, মারামারি ছাড়া কোনো সম্মেলন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবার ঘটনা নেই বললেই চলে। কোনো সম্মেলনে যদি নির্বাচনী পর্ব থাকে, তাহলে তো সম্মেলনের অনেক পূর্ব থেকে নির্দিষ্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে দেখা যায় অস্থিরতা। সে অস্থিরতা সঞ্চারিত হয় সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী কাউন্সিলর তথা ভোটারদের মাঝে। ফলস্বরূপ সম্মেলন চলাকালে শান্তিপূর্ণ আবহ সাধারণত দেখা যায় না। দেখা যায় গুমোট পরিবেশ। এমতাবস্থায় এমন সম্মেলনে পুরো সময় অবস্থান করতে অতিথিরাও বিব্রত বোধ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মিলনমেলা নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী ফেডারেশন অব বাংলাদেশী অ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা (ফোবানা)-এর ৩৫তম সম্মেলন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। গত ২৬ নভেম্বর শুরু হওয়া এ সম্মেলনে চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, শিল্পী-কলাকুশলী আর পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি চরম অবহেলার মধ্য দিয়ে ২৮ নভেম্বর মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। শত শত দর্শক-শ্রোতার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন বাজে ফোবানা এর আগে কেউ দেখেনি।

এখানে ফোবানার দৃষ্টান্তটা এজন্যে উপস্থাপন করা হলো যে, আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটা ধারণা বদ্ধমূল এমন-বিদেশের মাটিতে যে কোনো সংগঠনের সম্মেলনসহ প্রায় সব কিছুই ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু ফোবানা সম্মেলন মানুষের সে ধারণাতে চিড় ধরিয়েছে।

সাংগঠনিক সম্মেলন নিয়ে দেশে-বিদেশে এমন তিক্ত ও কঠিন বাস্তবতার প্রেক্ষিতে চাঁদপুরে গত ১৩ ডিসেম্বর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ সম্মেলনে নির্বাচনী পর্ব থাকলেও ছিলো উৎসবমুখরতা এবং সাবলীল পরিবেশ। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এমনটি ছিলো ব্যতিক্রম। সম্প্রতি দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে হাজীগঞ্জের মন্দিরসমূহে হামলা ও পুলিশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সম্মেলনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আশঙ্কা করা হয়েছিলো, সেটিরও কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং আয়োজনগত আড়ম্বতা ও শৃঙ্খলা ছিলো দেখোর মতো। এতে অংশগ্রহণকারী সকলের মধ্যে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেজন্যে প্রধান অতিথিসহ সকলে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত চাঁদপুর জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্ত্তীকে সভাপতি করে নতুন কমিটি গঠনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরুর দায়িত্ব দেন। এ সময় কোনো প্রার্থী না থাকায় শতভাগ কণ্ঠভোটে আগামী দু’ বছরের জন্যে বর্তমান সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী নূতন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করলে তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে উপস্থিত সকলে অভিনন্দন জানান।

বলা দরকার, অর্থ, ক্ষমতা ও জনপ্রিয়তার বলে অনেকেই বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান। পরবর্তীতে সাংগঠনিক দক্ষতার অভাবে কাক্সিক্ষত গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারেন না। যার ফলে নির্দিষ্ট মেয়াদ চলাকালে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ দেখা দেয়, যেটা সংগঠনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। এমন বাস্তবতার বিপরীতে একটি শান্তিপূর্ণ সুশৃঙ্খল সম্মেলনে চাঁদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে সুভাষ চন্দ্র রায় ও তমাল কুমার ঘোষের পুনঃনির্বাচিত হওয়াটা নিঃসন্দেহে তাঁদের অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচায়ক। আমরা তাঁদেরকে অভিনন্দন জানাই এবং উত্তরোত্তর অব্যাহত সাফল্য কামনা করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়