রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫, ০৮:৩০

বার্কিং ও ডেগেনহ্যামে কিংবদন্তি গৌতম ঘোষকে সংবর্ধনা

এক ঐতিহাসিক সকাল ও সাংস্কৃতিক সংলাপ

লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া
এক ঐতিহাসিক সকাল ও সাংস্কৃতিক সংলাপ

বার্কিং ও ডেগেনহ্যাম টাউন হলের মেয়র পার্লারে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো এক স্মরণীয় ‘কফি সকাল’, যেখানে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির শতাধিক সদস্য স্বাগত জানালেন ভারতের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ও তাঁর স্ত্রীকে।

অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন বার্কিং ও ডেগেনহ্যামের সম্মানিত মেয়র মইন কাদরী, যাঁর নেতৃত্বে এই ঘরোয়া ও অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠান ভরে উঠেছিল সৃষ্টিশীলতা, স্মৃতি ও সাংস্কৃতিক সংযোগের উষ্ণতায়। উপস্থাপনায় ছিলেন ঝড়ঁফয সংগঠনের পরিচালক মি. ফয়সাল, যিনি অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণভাবে আলোচনায় তুলে ধরেন গৌতম ঘোষের চলচ্চিত্র-জীবন, সাহিত্যপ্রেম ও দুই বাংলার মাঝে সেতুবন্ধনের ভূমিকাকে।

কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে গৌতম ঘোষ শোনালেন তাঁর ব্যক্তিগত যাত্রার গল্প। বাংলাদেশের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কথা উঠে আসে আবেগভরা কণ্ঠে। তিনি বলেন, “ফরিদপুরের নদী, মানুষ আর জীবনের কাহিনী আমার হৃদয়ে গাঁথা। যখন ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ বানাই, তখন কেবল সিনেমা করিনি, আমি বাংলাদেশের আত্মা খুঁজেছি।” এই কথাগুলো শুধু সিনেমার দৃষ্টিভঙ্গি নয়, বরং ইতিহাস, মানবিকতা ও সংস্কৃতির প্রতি তাঁর গভীর নিষ্ঠার প্রতিফলন।

আলোচনায় উঠে আসে গৌতম ঘোষের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র যেমন—তিতলি, শঙ্খচিল, আবার অরণ্যে, দেখা, মনিহারা এবং রাহেগি জিন্দেগি, যেখানে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন সমাজের বাস্তবতা, সম্পর্কের জটিলতা ও মানুষের অন্তর্লোক।

কফি পর্বের পর অতিথিরা স্থানান্তর হন কাউন্সিল চেম্বারে, যেখানে অনুষ্ঠিত হয় প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রবাসী তরুণরা জানতে চান, ইতিহাস ও মানবিকতাকে তিনি কীভাবে পর্দায় জীবন্ত করে তোলেন। গৌতম ঘোষের পরামর্শ ছিলো অনুপ্রেরণাময় : “তোমাদের শেকড়ের গল্প বলো, কারণ বিশ্ব এখন তোমার সত্য গল্পের অপেক্ষায় আছে।”

এই অনন্য অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মি. ফয়সাল বলেন, “গৌতমদা আমাদের শুধু সিনেমার কথা বলেননি, তিনি আমাদের শেকড় ও আত্মপরিচয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।”

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন মেয়র মঈন কাদরী, যিনি একে অভিহিত করেন : “একটি ঐতিহাসিক ও একাডেমিক সকাল, যা বার্কিং ও ডেগেনহ্যামের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।” এই সংবর্ধনা শুধু একটি সাক্ষাৎ নয়Ñএটি ছিল দুই বাংলার মানুষের হৃদয় মিলনের প্রতিচ্ছবি, চলচ্চিত্র ও ইতিহাসের এক উজ্জ্বল সংলাপ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়