প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:৪৪
গত ৬ বছরে কোন প্রকল্পে দূর্নীতি হয়নি
সাংবাদিক সম্মেলনে শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নে গত ৬ বছরে কোন প্রকল্পে দূর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন সুচিপাড়া উঃ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার।
|আরো খবর
১০ ডিসেম্বর শনিবার বেলা ১২ টায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই দাবী করেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশের প্রচলিত আইন এর প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা রেখে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ সকল অপরাধের প্রতি ঘৃনা রেখে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসাবে সকল নিয়মনীতি মান্য করে নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা,আন্তরিকতা ও সাহসীকতার সাথে পালন করে আসছি।
গত ৬ বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে আমি অত্র ইউনিয়নের দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও বিচার বানিজ্য মুক্ত একটি মডেল ইউনিয়নে পরিনত করতে সক্ষম হয়েছি বলে আমি মনে করি। গত ছয় বছর অত্র ইউনিয়নে উন্নয়নের স্বর্নযুগ বলে এলাকার সাধারণ জনগন মনে করেন।
অত্যন্ত দঃখের ও পরিতাপের বিষয় সমাজের কতিপয় ঘৃনীত ব্যক্তি যারা নিজেদেরকে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলে মনে করে। আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্নিত হয়ে আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষে পরিষদের দুই জন মেম্বার এর (যারা বিভিন্ন সময়ে আমার কাছে অনৈতিক সুবিধা নিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়) মাধ্যমে একটি মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে আপনাদের গন-মাধ্যম, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন পত্রিকায় খবর প্রকাশ করেছে। আমি এসব মিথ্যা অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি মনে করি আমি নিজে কোনো দুর্নীতি করিনা, অভিযুক্ত ইউপি সদস্যদের ও দুর্নীতি করার সুযোগ দিচ্ছি না। এতে হয়ত তারা আমার প্রতি ক্ষিপ্ত। ষড়যন্ত্রকারীরা এ সুযোগটা ব্যবহার করতে চেষ্টা করছে।
তারা যে অভিযোগটি দিয়েছেন তা মিথ্যা,বানোয়াট,ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মেম্বারদের সই জাল করে অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ প্রচার করছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আসলে উল্লেখিত মেম্বারদ্বয় উক্ত প্রকল্পের সভাপতি বা সেক্রেটারি নয়। তারা উক্ত প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নয়। এ ধরনের প্রকল্পে কোন মেম্বারের সই তে টাকা উত্তোলন হয়না। কমিটির কাজ হলো কাজটা মানসম্মত হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা। তারা যে কম্পোজ করা কাগজটি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, উক্ত কাগজে চেয়ারম্যান হিসাবে আমার দস্তখত ও নাই। যেহেতু আমার সই নাই সেহেতু উক্ত স্ব-ঘোষিত কমিটির ব্যপারে আমার দায় দায়িত্ব কতটুকু তা আপনারা ভালো বুঝবেন।
আমি মনে করি উল্লেখিত কম্পোজ করা কাগজটি তারা আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নিজেরা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করেছেন।
দ্বিতীয়ত উক্ত প্রকল্পের টাকা ব্যাংক থেকে অদ্যাবধি উত্তোলন করা হয় নাই। যা আপনারা ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখলেই বুঝতে পারবেন।
তৃতীয়ত উক্ত প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। পুকুরে পানি থাকার কারনে কাজটি করতে একটু সময় বেশী লেগেছে। তবে প্রকল্পের কাজ শেষ করার মেয়াদ এখনও বাকী আছে।
তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি শুধু এই প্রকল্প নয় আমার ছয় বছর চেয়ারম্যান মেয়াদ কালে আমি যদি কোথাও কোনো দুর্নীতি করে থাকি, যদি বিচার বানিজ্য করে থাকি বা একটি বারও কোনো অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকি এমন প্রমান হলে সকল শাস্তি মাথা পেতে নিব আর এসব প্রমান না হলে আমি আইনি পদক্ষেপ নিতে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
বক্তব্যে তিনি সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের সকল জনসাধারণ, গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ সহ সকলকে উক্ত মিথ্যা,বানোয়াট ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক অভিযোগে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করেছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহ মিরন ও সংরক্ষিত নারী মেম্বার সাবরিনা নুসরাত ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এসব অভিযোগ সাজিয়েছেন জানিয়ে বক্তব্য দেন, ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ লোকমান হোসেন লিটন, আবু তাহের জনী, শহীদুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা মুনসুর আহমেদ ও ধামড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী।
এছাড়া সাংবাদিক সম্মেলনে ৯ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহীমের পুত্র মোঃ হারুন, মৃতঃ আমীর হোসেনের স্ত্রী পেয়ারা বেগম ও মৃতঃ নোয়াব আলীর পুত্র সুলতান আহম্মদ দাবী করেন, অভিযোগকারি ২ ইউপি মেম্বার দূর্নীতিগ্রস্থ ও সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে কাজ করেন।
প্রসঙ্গত, ওই ইউনিয়নে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের আওতায় ৯ নং ওয়ার্ডের শোরসাক ফিশারী পুকুর পাড়ে গার্ড ওয়াল নির্মাণ কাজের প্রকল্পের কোনো প্রকার কাজ না করে বাস্তবায়ন কমিটির সকলের স্বাক্ষর জাল করে কমিটি জমা করে বেনামে প্রকল্প দেখিয়ে ইউনিয়ন কমিটির প্রত্যয়ন পত্র দেয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে এমনটি করা হয়েছে মর্মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ করেছেন ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মিরন হোসেন (শাহ মিরন) ও নারী মেম্বার সাবরিনা নুশরাত। অভিযোগের পর তড়িঘড়ি করে চেয়ারম্যান ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।