প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২১, ১৯:৪০
কাল চাঁদপুরসহ দেশের কয়েকশ' গ্রামে ঈদুল আজহা
আগামীকাল ২০ জুলাই মঙ্গলবার চাঁদপুরসহ দেশের কয়েকশ' গ্রামে ঈদুল আজহা পালিত হবে। দেশের চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল না হয়ে আরব বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রেখে দেশে আগাম ঈদের প্রবক্তা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রার হামিদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম মাওলানা আবু ইছহাক ইংরেজি ১৯২৮ সাল থেকে এ প্রথার প্রচলন শুরু করেন। সাদ্রা থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীগণ এ প্রথা চালু করার কারনে দেশের কয়েকশ' গ্রামে এখন সাদ্রা দরবারের নিয়মে আগাম ঈদ পালিত হচ্ছে।
|আরো খবর
২০ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জামাত হবে সাদ্রা দরবার শরীফ,সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা মাঠে। সাদ্রা গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে ৭টি ঈদের জামাত জানিয়েছেন সাদ্রা দরবার শরীফে ঈদের জামায়াতের ইমামতি করবেন আল্লামা জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।
সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ৯২ বছর ধরেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাদ্রাসহ পাশের ৫০টি গ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সাদ্রা এলাকার ইউপি মেম্বার সফিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সাদ্রা ও পার্শ্ববর্তী সমেশপুর গ্রামের মানুষ ঈদ উদযাপন করেছেন।
সাদ্রা দরজার শরীফের পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার ঈদ পালনের জন্য আমরা সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করেছি। আগে ঘোষিত সময়ে সকল স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে ও কোরবানী দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে আজ ঈদ করছি। আমরা নির্ধারিত কোন দেশকে ফলো করি না। তবে ঈদুল আযহার কথা বললে পক্ষান্তরে সৌদি আরবকে আমাদের ফলো করতেই হয়। কারণ, হজ ফলো না করলে আমরা কোরবানি করতে পারি না। তারপরও আরব বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা বিশ্বাসযোগ্য হলে আমরা ঈদ পালনে সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। তিনি আরও বলেন, করোনার কারনে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামায়াত করবো।
যেসব এলাকায় আগাম ঈদ
সাদ্রা ছাড়াও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করা চাঁদপুরের গ্রামগুলো হলো- হাজীগঞ্জের হুরুমচাইল, অলীপুর, বেলচোঁ, জাকনি, বাসারা,কাঁসারা, হোটনী, বেলচোঁ, মুন্সীরহাট, উচ্চঙ্গা, দক্ষিণ বলাখাল, প্রতাপপুর,রামচন্দ্রপুর, মেনাপুর, শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
এছাড়া চাঁদপুরের পাশের জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, দিনাজপুর,জেলার কয়েকটি স্থানে মাওলানা ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ছয় ছেলে এ মতবাদে চালিয়ে আসেন। এর মধ্যে পীরের বড় ছেলে আবু যোফার মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুর পর এখন তার ছেলে আরিফও এ মতবাদ চালাচ্ছেন।
সাদ্রা দরবারের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিসকাত চৌধুরী বলেন, হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি এ তিন মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে- পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তেও যদি চাঁদ দেখা যায় আর সে সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তেও পৌঁছায় তাহলে পূর্ব প্রান্তের মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা ফরজ এবং ঈদ করা ওয়াজিব। একইভাবে কোরবানী ঈদকে উদযাপনের জন্য পৃথিবীর যেকান স্থান থেকে চাঁদ গেলেই হলো। তা ছাড়া হজ্বেরর একটি বিষয় তো পরিস্কার আছেই।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইনচার্জ হারুনুর রশিদ বলেন,স্থানীয়ভাবে ঈদের জামাতে আমাদের পুলিশ প্রহরা থাকবে।