শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২১, ১২:৩৫

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী

স্বাস্থ্যবিধি মানতে না চাইলে কঠোর হতে হবে

অনলাইন ডেস্ক
স্বাস্থ্যবিধি মানতে না চাইলে কঠোর হতে হবে

করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক জেলা কমিটির সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, করোনায় মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামাতে হবে। সেজন্যে চেষ্টা করতে হবে। বড় ধরনের কোনো সমাবেশ করা যাবে না। বেশিরভাগ অনুষ্ঠানাদি ভার্চুয়ালি করতে হবে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজসহ বেশিরভাগ কাজই ভার্চুয়ালি হয়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কেউ যদি মানতে না চান, সেক্ষেত্রে আরেকটু কঠোর হয়ে যান। তিনি বলেন, আমরা (চাঁদপুর জেলা) এখন যে অবস্থায় আছি, তা জাতীয় পর্যায়ের করোনায় আক্রান্তের হারের কাছাকাছি। কিন্তু সীমান্তবর্তী কিছু জেলাতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলেও এখনও অনেক জেলা খুব ভালো অবস্থানে আছে। আমাদের এই চাঁদপুর জেলাকেও আমরা ভালো অবস্থানে দেখতে চাই।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো মার্কেট, শপিংমল এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানে, সেক্ষেত্রে ওই সকল প্রতিষ্ঠান জরিমানাসহ প্রয়োজনে সীলগালা করে দিন। দেখবেন এই খবরদারি থাকলে অন্যরাও ঠিক হয়ে যাবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে করোনাবিষয়ক চাঁদপুর জেলা কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। এই কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপ্রধানে শিক্ষামন্ত্রী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সিভিল সার্জনের কাছে চাঁদপুরে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা মন্ত্রীকে সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, মানুষের মধ্যে মাস্ক বা স্বাস্থ্যবিধি মানতে শৈথিল্য চলে এসেছে। বিশেষ করে মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যারা আমাদেরকে কথা দিয়েছিলো যে, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবে। কিন্তু তারা তাদের কথা রাখছে না। তিনি বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা যদি একটু বেশি সক্রিয় হন, তাহলে আমাদের জন্যে সুবিধা হবে। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতগুলো এজন্যে কাজ করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের প্রশাসনেরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে আমাদের মতলব দক্ষিণের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার শিশু কন্যাসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, চাঁদপুুর এখন ইয়েলো জোনে আছে। শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা শুনে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাতে যা যা করণীয় সেটা করতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে আপনি একটি সভা আহ্বান করেন। তাতে আমিও থাকবো। এই অতিমারি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সকলের একত্রে কাজ করতে হবে। শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে মৃত্যুর হার। আক্রান্তের হারও আরও কমিয়ে আনতে হবে। যারা করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদেরকে নিয়েও ভার্চুয়ালি হোক আর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হোক সভা আহ্বান করে গণসচেতনতায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর যারা কাজগুলো করবে, তারা যেনো আক্রান্ত না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাছাড়া সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। ক্যাবল টিভির স্ক্রলে গণসচেতনতামূলক প্রচারণার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, আমি আবারও বলছি, আমরা আরও ভালো অবস্থানে যেতে চাই। পৃথিবী করোনামুক্ত হোক এটাই আমরা কামনা করছি।

পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার) বলেন, পুলিশ বাহিনী চাঁদপুরে যথাযথ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সদস্যদের মাঝেও কিছুটা আতঙ্ক কাজ করে। সকলে যদি আমরা সচেতন না হই, তাহলে জেলা করোনামুক্ত বা করোনার প্রভাব কমাতে হিমশিম খেতে হবে। তিনি বলেন, আমরা জানি লকডাউন হলে মানুষের কষ্ট হয়। কিন্তু যেভাবে মানুষ চলাফেরা করে বা করতে চায়, সেটা আসলেই ঠিক নয়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক মহল, জনপ্রতিনিধির জনসচেতনায় সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।

সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আমাদের চাঁদপুরে করোনা শনাক্তের হার ছিলো ১৪ ভাগ। জুনে এসে তা দাঁড়িয়েছে ১৬.৭৯ ভাগ। জাতীয় পর্যায়ে এটি ১৬.২৪ ভাগ। আক্রান্তের সংখ্যা এ মাসে একটু বেশি। তবে মৃত্যুর হার কম। এ পর্যন্ত গত ১৫ মাসে ৪৯৯০ জন আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্য হয়েছে ১২৩ জনের। তিনি বলেন, ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আরটি পিসিআর ল্যাবে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনি বলেন, চাঁদপুরে ইতোমধ্যে সিনোভ্যাক্সের ৯ হাজার ছয়শ’ টিকা এসেছে। যা দিয়ে ৪ হাজার ৮শ’ জনকে দুইবারে টিকা দেয়া যাবে। আগামী শনিবার থেকে নতুন করে টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি আরো বলেন, আগের ১৫ হাজারের মতো রেজিস্ট্রেশনকৃত ব্যক্তি টিকাই দেননি। তবে নতুন করে আসা সিনোভ্যাক্সের টিকা পাবেন ডাক্তার, নার্স ও নার্সিং স্টুডেন্ট, চীনা নাগরিক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা টিকা নেননি, তাদেরকে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়া সিনিয়র সিটিজেন অর্থাৎ ষাটোর্ধ্বদের টিকা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। মন্ত্রী তাঁর দীর্ঘ বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেন, আমাদের জেলাকে কীভাবে ভালো রাখা যায়, সে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সকলকে এজন্যে সহযোগিতা করতে হবে। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী ও জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মনির হোসেন।

ভার্চুয়াল এ সভায় অংশ নেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক শেখ আরমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান, সমাজসেবার উপ-পরিচালক রজত শুভ্র সরকার, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগের কর্মকর্তাগণ। শিক্ষামন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে আগামী রোববার বিকেল পাঁচটায় জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেই সভায় শিক্ষামন্ত্রী সংযুক্ত থাকবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়