প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩১
রায়পুরে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানি, পলাতক প্রধান শিক্ষক

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রাইভেট পড়ানোর সময় চতুর্থ শ্রেণীর স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আবদুর রহিম নামের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বেলা দুটার দিকে ১০ নাম্বার রায়পুর ইউনিয়নের চালতাতুলি এলাকার বেগম রোকেয়া স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় রাতেই স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম (৪০) উপজেলার চরমোহনা ইউপির চরমোহড়া গ্রামের মৃত সেকান্তর বেপারীর ছেলে। সে বিবাহিত, দ্বিতীয় স্ত্রী সহ দুই সন্তান আছে তার। ওই প্রধান শিক্ষকের ব্যবহৃত মুঠোফোনে স্কুলছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি আছে বলে দাবি করেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন। স্কুলের একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিমের বিরুদ্ধ।
শিক্ষা কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম বলেন, এর আগেও অভিযোগ উঠেছিলো ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তারপরও ওই শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছিল। এই ঘটনায় অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার ২টার দিকে রায়পুর ইউনিয়নের চালতাতুলি এলাকায় ওই স্কুলের একটি কক্ষে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীসহ তার ভাইকেও পড়াচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম। প্রাইভেট শেষে ভাইকে দোকান থেকে চিপস আনতে পাঠিয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে (স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়)। এ ঘটনাটি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করে মায়ের কাছে শিক্ষককের যৌন হয়রানির বিষয় খুলে বলেন। ঘটনাটি এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিরা বিচার না করায় সন্ধ্যায় থানায় মামলা করেন ছাত্রীর মা। রাতে প্রধান শিক্ষককে আটকের চেষ্টা করলে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. মাহির বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তার প্রাইভেট পড়ানোর কক্ষে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন বলে আমরা বেশ কয়েকমাস আগে অভিযোগ পাই। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাকে আটকের চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়।’ মিরাজ ইসলাম নামের অপর তরুণ বলেন, ‘ প্রধান শিক্ষক আরও কয়েকবার ছাত্রীদের সাথে যৌন হয়রানি করেন। এসব ঘটনার প্রমাণ হিসেবে মোবাইলেও এভিডেন্স আছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ আমার মনে হয়, ওই পরিবারকে আমার পেছনে কেউ লাগিয়ে দিয়েছেন। আমি স্থানীয় কয়েকজনের ষড়যন্ত্রের শিকার। আবদুর রহিমের স্ত্রী দাবি করেন, ‘আমার স্বামী এ রকম নয়। ৫বছর ধরে আমি তার সঙ্গে সংসার করছি। তার মধ্যে এ রকম খারাপ কিছু দেখিনি।’
রায়পুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মান্নান বলেন, বুধবার রাতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রীর মা থানায় মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী ও প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।