প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৯
সিলেটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ
সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কাঁঠালবাড়ি গ্রাম। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছে। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
|আরো খবর
সংঘর্ষের সূত্রপাত
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে। মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বর্ণি গ্রামের এক যুবককে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের ২০-২৫ জন মিলে মারধর করে। এ ঘটনার জেরে রাত ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
রাতের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও পরদিন রোববার সকালে বর্ণি গ্রামের হাজারো লোক লাঠিসোঁটা, দা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
সংঘর্ষের দৃশ্যপট
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বর্ণি গ্রামের লোকজন মাইক ব্যবহার করে হামলার আহ্বান জানায় এবং সিএনজি অটোরিকশায় স্লোগান দিতে দিতে সংঘর্ষস্থলে পৌঁছে। পথে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
বেলা ১২টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইটপাটকেলের বৃষ্টির মতো আক্রমণে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। কাঁঠালবাড়ি গ্রামের লোকজনও প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় রণসাজে প্রস্তুত ছিল।
প্রশাসনের ভূমিকা
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। এরপরও বর্ণি গ্রামের পক্ষ থেকে মাইকে উসকানি চলতে থাকে।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, “সংঘর্ষ এড়াতে কোম্পানীগঞ্জ থানা, সালুটিকর তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
বর্তমান পরিস্থিতি
শেষ খবর অনুযায়ী, উভয় পক্ষকে দুইদিকে সরিয়ে মাঝখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অবস্থান করছে। কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উপসংহার
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সেনাবাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপের ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে এলাকাটি রক্ষা পেয়েছে।