প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৪
শাহরাস্তির আবুল কাশেম হত্যার রহস্য উন্মোচন
চায়ের কেটলির গরম পানিতে দোকানীকে হত্যা, আসামী গ্রেপ্তার
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার কালচোঁ গ্রামে রাস্তার পাশের চা দোকানী আবুল কাশেমকে ৫শ’ টাকার নোট ভাংতি নেই বলায় বাক-বিতন্ডের এক পর্যায়ে চুলার কেটলিতে থাকা চায়ের গরম পানি ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার মোঃবাবুল (৪৭)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার ২০ এপ্রিল দুপুরে গ্রেপ্তার আসামী বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চাঁদপুর আদালতে পাঠিয়েছে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার বাবুল সোনাইমুড়ি থানার আমকি গ্রামের পাঠান বাড়ির মৃত লোকমান হোসেন ওরফে লোকমান ডাকাতের ছেলে।
|আরো খবর
হত্যার শিকার আবুল কাশেম শাহরাস্তি উপজেলার কালচোঁ গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই গ্রামের রাস্তার পাশের চা দোকানী। পুলিশ জানায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে আবুল কাশেম তার দোকান খুলে বসেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি মো. বাবুল ও তার সহযোগিতা দুজন মোটরবাইকযোগে ওই চা দোকানে বসেন। তারা তিনজন ওই দোকানে চা পান করেন এবং চা পান করা অবস্থায় সিগারেট চান। সিগারেটও দেয়া হয়। তার বিল প্রদানের জন্য দোকানী আবুল কাশেমকে ৫০০ টাকার নোট দেন। এত সকালে ৫০০ টাকার নোটের ভাংতি নেই বললে তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে গ্রেপ্তার আসামী বাবুলসহ তিনজন দোকানীর মাথায় আঘাত করে এবং চুলার কেটলিতে থাকা চায়ের গরম পানি শরীরে ঢেলে চলে যায়।
ওই অবস্থায় আবুল কাশেম চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল অনুমান পৌনে ৬টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় দোকানীর ছেলে মো. শরীফ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করার জন্য থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মফিজুল ইসলামের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রেপ্তার আসামী ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন মর্মে নিশ্চিত হন। এরপর শুক্রবার ১৯ এপ্রিল নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানা পুলিশের সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামী বাবুলের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
গ্রেপ্তার আসামী বাবুল পুলিশের জিজ্ঞাবাদে ঘটনা স্বীকার করেন এবং তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে পলাতক আসামী নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার কেগনারখিল গ্রামের পারভেজ এবং চাটখীল থানার ফতেপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ওরফে সোহেলসহ সোহেলের মোটরসাইকেল যোগে শাহরাস্তি থানাধীন কালোচো এলাকায় আসেন। চা ও চিগারেট নেয়ার পর ৫০০ টাকার ভাংতি নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে গরম পাণি ঢেলে এবং মাথায় আঘাত করে মোটরবাইকযোগ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার আসামীকে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।